মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৩:৫১ পূর্বাহ্ন

আজ রাখিবন্ধন উৎসব : বোন রাখি পরাবে ভাইকে

ডেস্ক রিপোর্ট
আপডেট : আগস্ট ২২, ২০২১

ভাই-বোনের মধ্যে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে হিন্দু ধর্মে, রাখিবন্ধন উৎসব  বিবেচিত হয়। প্রতি বছর শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব পালিত হয়।  সেই হিসেবে আজ রাখি পূর্ণিমা বা রাখিবন্ধন উৎসব।

ভাই-বোনের অমূল্য সম্পর্ককে অটুট রাখে রাখি। ভাইকে ভালোবেসে তার হাতে রাখি বাঁধে বোন। আর সারাজীবন বোনকে নিরাপদে রাখার প্রতিশ্রুতি দেয় ভাই। এভাবেই রক্তের সম্পর্ক ও ভালোবাসা নিবিড় হয়। রাখিবন্ধনের দিনে বোনরা তাদের ভাইয়ের কাছ থেকে উপহারও পায় এবং ভাই-বোন পরস্পরকে মিষ্টি খাওয়ায়। দীর্ঘকাল থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে এই প্রথা।

যুগ যুগ ধরে রাখিবন্ধনের এ দিনে বোন তার ভাইয়ের হাতে পবিত্র রাখি পরিয়ে আসছেন এবং ভাই তার বোনের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেন সারা জীবনের জন্য।

মহাভারতে আছে, একটি যুদ্ধের কৃষ্ণের কবজিতে আঘাত লেগে রক্তপাত শুরু হলে পাণ্ডবদের স্ত্রী দ্রৌপদী তাঁর শাড়ির আঁচল খানিকটা ছিঁড়ে কৃষ্ণের হাতে বেঁধে দেন। এতে কৃষ্ণ অভিভূত হয়ে যান। দ্রৌপদী তাঁর অনাত্মীয়া হলেও, তিনি দ্রৌপদীকে নিজের বোন বলে ঘোষণা করেন এবং দ্রৌপদীকে এর প্রতিদান দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। বহু বছর পরে, পাশাখেলায় কৌরবরা দ্রৌপদীকে অপমান করে তাঁর বস্ত্রহরণ করতে গেলে কৃষ্ণ দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষা করে সেই প্রতিদান দেন। এইভাবেই রাখিবন্ধনের প্রচলন হয়।

অন্য একটি গল্পে রয়েছে, দৈত্যরাজা বলি ছিলেন বিষ্ণুর ভক্ত। বিষ্ণু বৈকুণ্ঠ ছেড়ে বালির রাজ্য রক্ষা করতে চলে এসেছিলেন। বিষ্ণুর স্ত্রী লক্ষ্মী স্বামীকে ফিরে পাওয়ার জন্য এক সাধারণ মেয়ের ছদ্মবেশে বলিরাজের কাছে আসেন। লক্ষ্মী বলিকে বলেন, তাঁর স্বামী নিরুদ্দেশ। যতদিন না স্বামী ফিরে আসেন, ততদিন যেন বলি তাঁকে আশ্রয় দেন। বলিরাজা ছদ্মবেশী লক্ষ্মীকে আশ্রয় দিতে রাজি হন। শ্রাবণ পূর্ণিমা উৎসবে লক্ষ্মী বলিরাজার হাতে একটি রাখি বেঁধে দেন। বলিরাজা এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে লক্ষ্মী আত্মপরিচয় দিয়ে সব কথা খুলে বলেন। এতে বলিরাজা মুগ্ধ হয়ে বিষ্ণুকে বৈকুণ্ঠে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। বলিরাজা বিষ্ণু ও লক্ষ্মীর জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করেন। সেই থেকে শ্রাবণ পূর্ণিমা তিথিটি বোনেরা রাখিবন্ধন হিসেবে পালন করে।

এই রাখিকে আসলে শুভ শক্তির প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, যুদ্ধে যাওয়ার আগেও রাখি বাঁধা হতো। ৩২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মহামতি আলেকজান্ডার ভারত আক্রমণ করলে আলেকজান্ডারের স্ত্রী রোজানা রাজা পুরুকে একটি পবিত্র সুতো পাঠিয়ে তাঁকে অনুরোধ করেন আলেকজান্ডারের ক্ষতি না করার জন্য। পুরু ছিলেন কাটোচ রাজা। তিনি রাখিকে সম্মান করতেন। যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি নিজে আলেকজান্ডারকে আঘাত করেননি।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ