দিন যতো যাচ্ছে আরও নাজুক হচ্ছে পাকিস্তানের বন্যা পরিস্থিতি। বন্যার কারণে দেশটির এক-তৃতীয়াংশ এলাকা (প্রায় যুক্তরাজ্যের সমান) ডুবে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতির অবনতিতে জরুরি ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে পাকিস্তান সরকার।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মানুর উপত্যকায় বন্যার কারণে সেতু ভেঙে পড়ায় নদীর ওপারে আটকে পড়েছেন শত শত মানুষ। এমন অবস্থা থেকে উদ্ধারের জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছেন তারা। বিবিসির সংবাদকর্মীদের একটি দল ঘটনাস্থল থেকে খবর সংগ্রহ করতে গেলে স্থানীয় লোকজন তাদের কাছে হাতে লেখা চিরকুট ছুড়ে দেন। চিরকুটে তারা লেখেন, ‘আমাদের ত্রাণ সরবরাহ প্রয়োজন, ওষুধ প্রয়োজন। দয়া করে সেতুটি পুনর্গঠন করুন। আমাদের কাছে এখন আর কিছু্ই নেই।’ পাকিস্তানের কাঘান পর্বত এলাকায় মানুর উপত্যকার অবস্থান। এটি পাকিস্তানের বিখ্যাত একটি পর্যটন এলাকা। বন্যায় এ পর্যন্ত সেখানে নারী–শিশুসহ অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জুনের মাঝামাঝি থেকে শুরু হওয়া প্রবল বন্যা আর বৃষ্টিতে দেশটির ৭২টি জেলার অন্তত ৩ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গেলো কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা অতিবৃষ্টি আর হিমবাহ গলে এই ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ। প্রবল বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে এক হাজার ৬০ ছাড়িয়ে গেছে। পানিতে রাস্তাঘাট, সেতু তলিয়ে যাওয়ায় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশসহ বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে, উদ্ধার কাজ ও ত্রাণ তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। অবরুদ্ধ লাখো অধিবাসীর জন্যে জরুরি ভিত্তিতে, খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধ সহায়তা দরকার। তবে আগ থেকেই পাকিস্তানের অর্থনীতি বিপর্যস্ত থাকায় প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটির সরকার। এমন অবস্থায়, আন্তর্জাতিক মনিটরি ফান্ড, আইএমএফ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে সহায়তা চেয়েছে পাকিস্তান সরকার।
পাকিস্তানের আবেদনে সাড়া দিয়ে ইতোমধ্যে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে কানাডা, ফ্রান্স, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক, আজারবাইজানসহ বেশ কয়েকটি দেশ। সূত্র: বিবিসি