বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ অপরাহ্ন

রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে রিজভী, শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : জুন ২২, ২০২২

গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্লাবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর অবস্থান করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেই সঙ্গে বিপাকের মুখে পড়েছেন আমন্ত্রণকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও ক্লাবের সভাপতি ওবায়দুল ইসলাম। ইতোমধ্যে ক্লাব কর্তৃপক্ষ বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সাদা দলের এ শিক্ষক কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।
জানা যায়, এ ঘটনায় ক্লাবের সদস্য ও ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছারকে আহ্বায়ক করে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। রবিবার (১৯ জুন) রাতে রিজভী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে যান। সেখানে তিনি অবস্থান করেন রাত ১টা পর্যন্ত। সঙ্গে তার স্ত্রী ও বন্ধুরাও ছিলেন।

‘রাজনৈতিক একজন নেতার সঙ্গে ক্লাবে বৈঠক করার বিষয়ে’ জানতে চেয়ে এই নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও সরকারে থাকা আওয়ামী লীগ সমর্থিত নীল দলের সিনেট সদস্য অধ্যাপক আব্দুর রহীম।

ওবায়দুল ইসলাম সাংবাদিক বলেন, রাতে ক্লাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অতিথিরা আসেন। খাওয়া-দাওয়া করেন। এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ক্লাবের সভাপতি। আমার আমন্ত্রণেও রিজভীসহ কিছু অতিথি এসেছিলেন। কেউ গোপন বৈঠক করতে কি ক্লাবে আসবে? কোনো বৈঠক করা হয়নি। সাধারণ আড্ডা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ আছে এবং অতিথিরা তাদের স্ত্রীদের নিয়ে এসেছিলেন। কেউ যদি গোপন বৈঠকের পরিকল্পনা নিয়ে আসে তাহলে কি স্ত্রীদের নিয়ে আসবেন? আমরা যখন ক্লাবে আড্ডা দিচ্ছিলাম তখন অন্য রুমে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরাও ছিলেন। রাতে ক্লাবে এ রকম অতিথি সব শিক্ষকেরই আসে। আমরা তো কখনো এ নিয়ে প্রশ্ন তুলিনি? কেন তুলবো? এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। মূলত হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এ ধরনের ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ক্লাবের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, রাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভীকে গত রবিবার রাত ১১টা ১৭ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাবে প্রবেশ করতে দেখা যায়। তিনি সেখানে রাত একটা পর্যন্ত অবস্থান করেন।

ওই সময় ক্লাবে তার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপি সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ও ক্লাবের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলামসহ আরও ১০ থেকে ১২ জন ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী বলেছেন, ‘অনেক প্রশ্ন। যেখানে রাত ১০টার সময় সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায় সেখানে এভাবে রাত ১টা পর্যন্ত রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে বৈঠক কেন? এমনিতেই দেশে নাশকতামূলক নানা আশঙ্কা করা হচ্ছে। তার মধ্যে এ বৈঠক স্বাভাবিক মনে হচ্ছেনা। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। একই সঙ্গে ক্লাব কর্তৃপক্ষের দায় দায়িত্ব অবস্থান নিয়ে আমার প্রশ্ন, তারা ঠিক কাজ করছে কিনা।

এদিকে ব্যবস্থা নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। তিনি বলেছেন, ‘ঘটনার জানার পরই আমি প্রক্টরকে বলেছি ঘটনা খতিয়ে দেখতে, ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে একটা পূর্নাঙ্গ রিপোর্ট দিতে। আমার এখতিয়ারের মধ্যে যা আছে সেভাবে আমি দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

এদিকে রিজভীর সঙ্গে সাদা দলের সাবেক আহ্বায়কের বৈঠককে ‘রাষ্ট্র বিরোধী ষড়যন্ত্র’ আখ্যায়িত করে গত মঙ্গলবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। সমাবেশ থেকে রিজভী ও অধ্যাপাক ওবায়দুলকে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ