মাথা খুব ব্যথা করা বা গা ব্যথার সঙ্গে মাথার এক পাশ থেকে শুরু করে পুরো মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা করা, সঙ্গে হালকা জ্বর— যাদের এই উপসর্গগুলো রয়েছে তারা জানেন মাইগ্রেনের যন্ত্রণা কতটা কষ্টের। টানা কয়েকদিন এই ব্যথা থাকার পর শরীর দুর্বল হয়ে যায়। আর এই গরমের দিনে সূর্যের প্রখর তাপে স্বাভাবিকভাবেই মাথার যন্ত্রণা বাড়ে। কিন্তু মাথা ব্যথার উৎস কী কিংবা কেন এমনটা হয়?
মাইগ্রেন হচ্ছে জিনঘটিত রোগ। পরিবারের কোনো পূর্ব সদস্য বা পরিবারের কারো এই মাইগ্রেন থাকলে অন্য সদস্যেরও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মস্তিষ্কের ট্রাইজেমিনাল স্নায়ু উত্তেজিত হওয়ার ফলে ব্যথার শুরু হয়। সেরেটোনিন নামক রাসায়নিকের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলেও এই ব্যথা হয় বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মত।
এছাড়াও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, শুধু ওষুধ বা প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত না নিলে মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়ে তা নয়। দৈনন্দিন জীবনের অনেক অভ্যাসের উপরও নির্ভর করে এই ব্যথা বাড়বে কি না। প্রতিদিনের মধ্যে থাকা কিছু অভ্যাস বাদ দিলে অনেকটাই মুক্ত থাকা যায় এই যন্ত্রণাদায়ক অসুখ থেকে। এবার তাহলে সেই সব অভ্যাসগুলোর বিষয়ে জেনে নেয়া যাক—
মানসিক চাপ: সব সময় অফিসের চাপ, পারিবারিক সমস্যার মতো নানা ঘটনাগুলি আমাদের প্রতিদিনের সঙ্গী। যে কারণে মানসিক চাপ বাড়তে থাকে। সাধারণত চিন্তা, উদ্বেগ ও মানসিক চাপ থেকে মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়ার প্রধান কারণ।
অনিয়মিত ঘুম: প্রতিদিন অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমের জন্য বরাদ্দ রাখা উচিত। তা যদি সম্ভব না হয় তাহলে অন্তত ৬ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। একদিন কম ঘুমানো, আবার একদিন বেশি ঘুমানো; এমনটা না করে প্রতিদিন নিয়ম মেনে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানো উচিত।
চিনি এড়ানো: চিনিযুক্ত খাবার সব সময় এড়িয়ে চলুন। খাদ্যতালিকায় যত সম্ভব চিনিজাতীয় খাবার কম রাখা যায় ততোই ভালো। বেশি মাত্রায় চিনি খাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ে। আর এতে মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
আবহাওয়া: প্রখর রোদ বা প্রচণ্ড ঠাণ্ডা, দুটোই মাইগ্রেনের জন্য বিপদজনক। এ জন্য এমন আবহাওয়া থেকে সব সময় সাবধানে ও সতর্ক থাকতে হবে। এ সময় শারীরিক ব্যায়াম করা যেতে পারে। এতে মাইগ্রেনজনিত সমস্যা দূরে থাকে।
খালি পেটে থাকা: দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে অ্যাসিডিটির সমস্যা হয়। আর অ্যাসিডিটির কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। এ জন্য কাজের মাঝেও পরিমাণমত খেতে হবে।
কফির অভ্যাস: কফি পানের অভ্যাস থাকলে কখনো হঠাৎ করেই তা বন্ধ করবেন না। গবেষণায় দেখা গেছে, মাইগ্রেনের রোগীদের ক্যাফিনের উপস্থিতি হঠাৎ বন্ধ করলে সমস্যা বেড়ে যায়। আবার মাত্রারিক্ত ক্যাফিনও মাইগ্রেনের রোগীদের জন্য ভালো নয়। এ জন্য পরিমিত কফি পান করুন।