চীনের দক্ষিণাঞ্চলে বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে বাধ্য হয়ে লাখো মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম একথা জানায়। খবর এএফপি’র।
এ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে পার্ল রিভার অববাহিকার নিচু এলাকায় ব্যাপক বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে দেশটির ম্যানুফ্যাকচারিং, শিপিং ও লজিস্টিক কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়েছে। এদিকে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে চীন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার কারণে ইতোমধ্যে সরবরাহ চেইন চাপের মুখে পড়েছে।
চীনের জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র জানায়, মে মাসের শুরু থেকে জুনের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে দেশটির গুয়াংদং, ফুজিয়ান ও গুয়াংঝি প্রদেশে গড়ে ৬২১ মিলিমিটার (২৪ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। ১৯৬১ সালের পর এটি সর্বোচ্চ।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে পরিবেশিত ভিডিও ফুটেজে গুয়াংদং রাজ্যের শাওগুয়ান নগরীতে সাময়িক আশ্রয় কেন্দ্রে পরিণত করা বিভিন্ন স্কুলে লোকজনকে গাদাগাদি করে থাকতে দেখা যাচ্ছে। এদিকে একটি খেলার মাঠে কয়েকশ’ তাঁবু টানানো হয়েছে।
ভিডিও ফুটেজে পার্শ্ববর্তী গুয়াংঝি অঞ্চলে ঘোলাটে পানির ঢলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দেখা দেয় এবং জরুরি উদ্ধার কর্মীদের রাবারের ডিঙ্গি নৌকাতে করে গ্রামবাসীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে দেখা যায়।
গুয়ংদং কর্তৃপক্ষ সোমবার জানায়, এমন দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে দুই লাখেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখন পর্যন্ত ১৭০ কোটি ইউয়ান (২৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার) মূল্যের সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এমন দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে জিয়ানঝি প্রদেশে সোমবার বন্যার জন্য রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে।
চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া সোমবার জানায়, ফুজিয়ানে বন্যার কারণে এ মাসের শুরু থেকে দুই লাখ ২০ হাজারেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে চলতি মাসের গোড়ার দিকে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশে প্রবল বর্ষণের কারণে সৃষ্ট বন্যায় কমপক্ষে ২১ জনের প্রাণহানি ঘটে।