লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার সময় আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভেতরে এবং বাইরে গত এক সপ্তাহে কমপক্ষে ২০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
গত রোববার কাবুলের নিয়ন্ত্রণ কট্টর ইসলামি গোষ্ঠী তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দূতাবাস কর্মী, নাগরিক এবং ঝুঁকিতে থাকা আফগানদের সরিয়ে নেওয়ার সময় প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।
রোববার পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ন্যাটোর ওই কর্মকর্তা বলেছেন, কাবুল বিমানবন্দরের বাইরের সঙ্কট দুর্ভাগ্যজনক। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিদেশিদের সরিয়ে নেওয়াই আমাদের অগ্রাধিকার।
গত এক সপ্তাহের প্রত্যেকদিনই কাবুলের বিমানবন্দরে দেশ ছাড়তে মরিয়া লোকজনের উপচে পড়া ভীড় দেখা গেছে। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিক, দূতাবাসের কর্মী এবং ঝুঁকিপূর্ণ বেসামরিক আফগানদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
ন্যাটোর ওই কর্মকর্তা বলেছেন, আমাদের সৈন্যরা কাবুল বিমানবন্দরের বাইরের এলাকা থেকে কঠোর দূরত্ব বজায় রেখেছেন; যাতে তালেবানের সঙ্গে কোনও সংঘর্ষ না হয়।
দেশের বিভিন্ন প্রদেশ একে একে দখলের পর গত রোববার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। কাবুল দখলের মাধ্যমে মার্কিন-নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দুই দশকের যুদ্ধ শেষে তালেবান আবারও ক্ষমতায় এসেছে।
বিদেশি সৈন্যদের আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ায় তালেবান তড়িৎগতিতে ক্ষমতায় ফেরার অভিযান শুরু করে চলতি মাসের শুরুর দিকে। তালেবানের অভিযানের মুখে দেশটির ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি, পালিয়ে যান সংযুক্ত আরব আমিরাতে। আফগান সরকারের পতনের পর তালেবান শিগগিরই সরকার গঠন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
তালেবান আবারও ক্ষমতায় আসায় দুই দশক আগের তাদের শাসনের সময়ের কঠোর বিধি-বিধান ফিরতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন দেশটির নাগরিকরা। সুন্নীপন্থী ইসলামি এই গোষ্ঠীর অতীত শাসনের দুঃসহ স্মৃতি স্মরণ করে হাজার হাজার আফগান দেশ ছাড়তে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।