ওপেনার ফিন অ্যালেনের লড়াকু ইনিংসের পর দুই পেসার টিম সাউদি ও ট্রেন্ট বোল্টের দুর্দান্ত বোলিং নৈপুন্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে সমতা ফেরালো নিউজিল্যান্ড।
গতরাতে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ড বৃষ্টি আইনে ৫০ রানে হারিয়েছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এই জয়ে সিরিজে ১-১ সমতা ফেরায় নিউজিল্যান্ড। প্রথম ওয়ানডে ৫ উইকেটে জিতেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বার্বাডোজে টস জিতে প্রথমে বোলিং বেছে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩১ রানের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের টপ-অর্ডারের তিন ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান ক্যারিবীয় দুই পেসার জেসন হোল্ডার ও আলজারি জোসেফ। মার্টিন গাপটিল ৩ ও এ ম্যাচের অধিনায়ক টম লাথাম খালি হাতে হোল্ডারের শিকার হন। ডেভন কনওয়েকে ৬ রানের বেশি করতে দেননি জোসেফ।
টপ-অর্ডারের ব্যর্থতার পর চতুর্থ উইকেটে গুরুত্বপূর্ণ ৮৪ রানের জুটি গড়েন ড্যারিল মিচেল ও অ্যালেন। মিচেলকে ব্যক্তিগত ৪১ রানে শিকার করে জুটি ভাঙ্গেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অফ-স্পিনার কেভিন সিনক্লেয়ার।
এরপর মিচেল ব্রেসওয়েলের সাথে দ্রুত ৩৩ বলে ৩৫ রান যোগ করেন অ্যালেন। তাতে নিউজিল্যান্ডের স্কোর দেড়শ স্পর্শ করে। তবে ক্যারিবীয় দুই স্পিনার আকিল হোসেন-সিনক্লেয়ার ও হোল্ডার মিলে দ্রুত ৫ উইকেট শিকার করে নিউজিল্যান্ডকে ২শর নিচে গুটিয়ে দেয়ার পথ তৈরি করলে ১৮১ রানে নবম উইকেট হারায় কিউইরা।
এরমধ্যে অ্যালেনের উইকেটও ছিলো। সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে গিয়ে ব্যক্তিগত ৯৬ রানে হোল্ডারের বলে আউট হন অ্যালেন। ১১৭ বলের ইনিংসে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন তিনি।
শেষ উইকেটে ২৮ বলে ৩১ রানের জুটি গড়ে নিউজিল্যান্ডকে লড়াই করার মত পুঁিজ এনে দেন মিচেল স্যান্টনার-বোল্ট। ইনিংসের ১০ বল বাকী থাকতে ২১২ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। বোল্ট ১৬ রানে আউট হন। ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন স্যান্টনার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিনক্লেয়ার ৪১ রানে ৪টি ও হোল্ডার ২৪ রানে ৩ উইকেট নেন।
সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে ২১৩ রানের স্বল্প টার্গেট পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের দুই পেসার সাউদি ও বোল্টের পেস আগুন বোলিংয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে ক্যারিবীয়দের টপ-অর্ডার। ২৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৬ উইকেট ভাগাভাগি করে নেন বোল্ট ও সাউদি।
ইনিংসে ২২ দশমিক ৪ ওভার পর্যন্ত খেলার হবার পর বৃষ্টিতে ম্যাচটি বন্ধ হয়ে যায়। ঐ সময় ক্যারিবিয়দের সংগ্রহ ছিল ৭ উইকেটে ৬৩ রান।
বৃষ্টির কারণে ৫৩ মিনিট খেলা বন্ধ থাকলে, পরবর্তীতে বৃষ্টি আইনে ৪১ ওভারে ২১২ রানের নতুন টার্গেট পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ অবস্থায় ৩ উইকেট হাতে নিয়ে ১১০ বলে ১৪৯ রান করতে হতো ক্যারিবীয়দের।
টপ-অর্ডার চরম ব্যর্থ হলেও নবম উইকেটে নিউজিল্যান্ডের বোলারদের বিপক্ষে দারুন ব্যাট করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই লোয়ার-অর্ডার ব্যাটার ইয়ানিক চারিয়া ও জোসেফ। ৬৪ বলে ৮৫ রান যোগ করেন তারা। ফলে জয়ের জন্য শেষ ৪১ বলে ৫৫ রানের প্রয়োজন পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। কিন্তু ৮ বল ও ৪ রানের ব্যবধানে শেষ ২ উইকেট হারিয়ে হার মেনে নেয় ক্যারিবীয়রা।
দলীয় ১৫৭ রান ও ৩৫তম ওভারে জোসেফকে শিকার করে জুটি ভাঙ্গেন সাউদি। ৩৬তম ওভারে শেষ ব্যাটার চারিয়াকে তুলে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করেন স্যান্টনার। ১৬১ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
চারিয়া ৫২ ও জোসেফ ৩১ বলে ৪৯ রান করেন। নিউজিল্যান্ডের সাউদি ২২ রানে ৪টি ও বোল্ট ১৮ রানে ৩ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন অ্যালেন।
সিরিজটি বিশ^কাপ সুপার লিগের অংশ হওয়ায়, এই জয়ে ১১ ম্যাচে ১০০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থস্থানে উঠলো নিউজিল্যান্ড। ২৩ ম্যাচে ৯০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ষষ্ঠস্থানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
আগামী ২২ আগস্ট সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আবারও মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।