বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র নেই। হাইব্রিড সরকার দেশ পরিচালনা করছে। মানুষ গণতন্ত্রহারা, দেশে বাকস্বাধীনতা নেই। সে কারণে আমেরিকার গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ পায়নি বাংলাদেশ।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) উদ্যোগে আজ শনিবার আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন খন্দকার মোশাররফ। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দেশ একটা নীরব দুর্ভিক্ষের মধ্য দিয়ে চলছে মন্তব্য করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য প্রত্যেক দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত কয়েক দিনে চাল থেকে শুরু করে সব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে। আমাদের এখানে এটা নজিরবিহীন মূল্যস্ফীতি ঘটেছে। এই মূল্যস্ফীতি একদিকে, অন্যদিকে আমাদের টাকার মান কমে যাচ্ছে। এটা কীসের জন্য? এই দুঃশাসনের জন্য।’
খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, ‘বর্তমান ক্ষমতাসীনেরা গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে, সিন্ডিকেট করে সরকারে আছে, আর ব্যবসা- বাণিজ্যও আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটের হাতে। এই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট। তাই, আওয়ামী লীগ সরকার এটা কোনোদিন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। আজ সারা বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। মানুষ এই সরকারে প্রতি বিক্ষুব্ধ। এই সরকারের প্রতি তারা আস্থা হারিয়েছে। এ কারণে জনগণ শিগগির এ সরকারের পতন চায়।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য অভিযোগ করেন, ‘ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য এ সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে শুরু করে বাংলাদেশের বিনির্মাণের ইতিহাসকে বিকৃত করে মিথ্যা ইতিহাস প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। আমাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলের পাঠ্য বইয়ে মিথ্যা শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আজ বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। এটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আর গণতন্ত্র না থাকলে কোনো দেশে মানবাধিকার থাকে না। আমাদের দেশে গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মামলা, নির্যাতন এবং খুন—এসব গত ১২ বছর ধরে যেভাবে চলেছে, এর উদাহরণ পৃথিবীতে কোথাও নেই।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কটের নির্বাচন ছিল। ১৫২ আসনে কোনো প্রার্থী ছিল না। সুতরাং, জনগণের ভোটের প্রয়োজন হয়নি। তারপর ২০১৮ সালের নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে ডাকাতি করেছে। আবার নতুন করে তারা ষড়যন্ত্র করছে। আরেকটা কারচুপি করার চিন্তা-ভাবনা করছে।
এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে সভায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি প্রমুখ বক্তব্য দেন।