দক্ষিণ কোরিয়ার নিজস্ব গবেষণায় নির্মিত প্রথম রকেট মহাকাশে পৌঁছেছে। বিশ্বের সপ্তম রাষ্ট্র হিসেবে সফলভাবে মহাকাশে রকেট পাঠালো দেশটি। এর মাধ্য দিয়ে মহাকাশবিজ্ঞানে উচ্চাভিলাষ পূরণে এক ধাপ এগোলো সিউল। বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, উৎক্ষেপিত রকেটটির নাম কোরিয়ান স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল টু, বা সংক্ষেপে নুরি। রাজধানী সিউলের ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত গোহিউং থেকে ছোড়া হয় রকেটটি।
মঙ্গলবার ৩ স্তর বিশিষ্ট ‘নূরি’ নামের এ রকেটটি দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপের গোহেয়াং উৎক্ষেপণকেন্দ্র থেকে স্থানীয় সময় বিকেল চারটার দিকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য ঐতিহাসিক এ ঘটনা সরাসরি সম্প্রচারিত হয় দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলে। উপস্থাপককে বলতে শোনা যায়, ‘কোনো ত্রুটি ছাড়াই প্রবল গর্জনে আকাশের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে নুরি।’
উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে অস্ত্রের প্রতিযোগিতার মধ্যেই রকেটটি ছুড়েছে সিউল। সম্প্রতি দুটি দেশই নতুন ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। নুরি নির্মাণে দক্ষিণ কোরীয় মুদ্রায় খরচ হয়েছে দুই ট্রিলিয়ন ওন, যা ১৬০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ। ৪৭ দশমিক দুই মিটার লম্বা নুরির ওজন ২০০ টন। তরল জ্বালানিচালিত ছয়টি ইঞ্জিন রয়েছে এতে।
দক্ষিণ কোরিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা কোরিয়া অ্যারোস্পেস রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা কারির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে নুরির মতো আরও চারটি রকেট মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে সিউলের। বিশ্ব নেতৃত্বে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এমন পরিকল্পনা নিয়েছে দেশটির সরকার।
বিশ্বের প্রযুক্তিগত সক্ষমতার কেন্দ্র হিসেবে মনে করা হয় দক্ষিণ কোরিয়াকে। কিন্তু মহাকাশ গবেষণায় অনেক দেশের তুলনায় বেশ পিছিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া। ২০০৯ ও ২০১০ সালেও মহাকাশে রকেট পাঠানোর চেষ্টা করেছিল সিউল। দুটি চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছিল। দ্বিতীয় রকেটটি উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিস্ফোরিত হয়েছিল। ২০৩০ সাল নাগাদ চাঁদে একটি অনুসন্ধানী রকেট পাঠাতে চায় দক্ষিণ কোরিয়া।
বিবিসি জানায়, দক্ষিণ কোরিয়া এবার নিয়ে দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় ‘নূরি’ রকেট উৎক্ষেপণে সফল হল। দেশটি গতবছর অক্টোবরে এই রকেটে করে একটি ডামি স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়।
সেবার রকেটটি কাঙ্খিত উচ্চতায় পৌঁছতে পারলেও কক্ষপথে পৌঁছতে পারেনি। কারণ, রকেটের তৃতীয় স্তরের ইঞ্জিন নির্ধারিত সময়ের আগেই পুড়ে গিয়েছিল।