রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:০৪ পূর্বাহ্ন

বিএনপি-গণঅধিকারের বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত হলো

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : আগস্ট ৩, ২০২২

সরকার বিরোধী বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য গড়ার লক্ষে চলমান সংলাপের অংশ হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। গণঅধিকার পরিষদের নেতৃত্ব দেন দলের আহ্বায়ক অর্থনীতিবিদ ড. রেজা কিবরিয়া। প্রতিনিধি দলে সদস্য সচিব নুরুল হক নুর, যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, ফারুক হাসানসহ প্রায় দশজন উপস্থিত রয়েছেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর- এর নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন উপস্থিত রয়েছেন।

ঘন্টাব্যাপী বৈঠক শেষে গণঅধিকারের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, আমরা অনেক বিষয়ে একমত। একই পথে আছি। খুব বেশি বিষয়ে খুব একটা দ্বিমত নেই। যারা বাংলাদেশে একটি পরিবর্তন চায় এটা তাদের জন্য সুখবর।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণঅধিকারের সঙ্গে আলোচনায় আমরা খুশি হয়েছি। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়, সেবিষয়ে একমত। এই সরকারকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেয়া যায় না, এই সরকারকে সরানোর জন্য জনগণকে সাথে নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করবো। একটি যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে একমত হয়েছি। সেই আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্টানের বিষয়ে আমরা একসাথে কাজ করবো। এরপর সবাইকে নিয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠন করবো।

দুই দলের মধ্যে ১০টি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর। তিনি জানান, দেশের চলমান সংকট থেকে উত্তরণ ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে অন্যান্য গণতন্ত্রকামী দেশপ্রমিক দলসমূহের সাথে গণঅধিকার পরিষদ নিম্নোক্ত বিষয়ে একত্রে বা যুগপৎভাবে কাজ করতে নীতিগতভাবে একমত পোষণ করে।

১. ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় জনগণের ভোটবিহীন জোরজবরদস্তি করে ক্ষমতায় থাকা বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার হঠাতে যুগপৎ বা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন-সংগ্রাম।

২. অবাধ ,সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে একটি অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা।নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুর্নগঠন ,ইভিএম বাতিল করে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোটগ্রহণ।

৩. রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনায়নসহ সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কার।

৪. বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পুর্ণরূপে আলাদা করে প্রধান বিচারপতিসহ বিচারক নিয়োগে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন।

৫. বাক,ব্যক্তি ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, সভা-সমাবেশ করার অধিকারসহ নাগরিকদের সংবিধান স্বীকৃত সকল অধিকার প্রতিষ্ঠা।

৬. খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দী ও ধর্মীয় নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।ভিন্নমতের উপর রাষ্ট্রীয় দমন, পীড়ন, গুম, খুন, নির্যাতন-নিপীড়ন, হামলা- মামলা বন্ধে পদক্ষেপ।

৭. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ সকল গণবিরোধী ও নিপীড়নমূলক আইন বাতিল করা।

৮/ বর্তমান সরকারের গত ১৩ বছরের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের শ্বেতপত্র প্রকাশ করে দুর্নীতি ও অর্থপাচার রোধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ।

৯. মেগা প্রকল্প ও কুইক রেন্টালের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচার নিশ্চিত করা এবং দীর্ঘমেয়াদী জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আইন করে বাপেক্সেকে শক্তিশালী স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা।

১০. রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন,বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের চুক্তি,প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেশ,দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বসহ জাতীয় স্বার্থে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ