তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে লড়াই করেই সফরকারি পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরেছে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড। টম কুপার, বিক্রম সিং ও অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডেসের হাফসেঞ্চুরিতে শেষ পর্যন্ত আইরিশদের ২৯৮ রানে থামতে হয়। এতে করে তারা ম্যাচ হারে ১৬ রানে। তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে পাকিস্তান।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটি সুপার লিগের অন্তর্ভূক্ত। ফলে, প্রথম ম্যাচ জেতার সঙ্গে পাকিস্তান পেয়েছে ১০ পয়েন্ট। ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের পর মাত্র চতুর্থ দল হিসেবে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে বাবর আজমের দল ছুঁয়েছে একশ পয়েন্টের মাইলফলক। আর পাকিস্তান আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারলে সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে চলে আসবে।
এর আগে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি কোনও ফরম্যাটেই দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেনি পাকিস্তান-নেদারল্যান্ডস। এই ম্যাচ দিয়ে প্রথমবারের মতো দ্বিপাক্ষিক সিরিজে মুখোমুখি হল পাকিস্তান-নেদারল্যান্ডস ক্রিকেট দল।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) রটারডামে পাকিস্তান টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। ফখর জামানের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ও অধিনায়ক বাবর আজমের অর্ধশত ও শাদাব খানের ২৮ বলে ৪৮ রানের ক্যামিও ইনিংসে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১৪ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। জবাবে টম কুপার, বিক্রম সিং ও অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডেসের অর্ধশততে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৮ রানে থামে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে স্কোরবোর্ডে ১০ রান তুলতে ফর্মের তুঙ্গে থাকা ইমাম উল হকের উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে পাকিস্তান। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেটে ১৬৮ রানের জুটি গড়ে দলকে শক্ত ভিত গড়ে দেন উদ্বোধনী ব্যাটার ফখর জামান ও অধিনায়ক বাবর আজম। দলীয় ১৭৮ রানে ৮৫ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ে ৭৪ রান করে বাবর বিদায় নিলে ভাঙে জুটি। সর্বশেষ ৮ ম্যাচে এটি তার সপ্তম ৫০ পেরোনো ইনিংস। বাবরের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি ফখর জামান। বিদায়ের আগে ১০৯ বলে ১২ চার ও ১ ছয়ে ১০৯ রানের ঝকঝকে ইনিংস উপহার দেন তিনি। এটি ছিল তার ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি।
শেষ দিকে শাদাব খানের ২৮ বলে ৪ চার ও ২ ছয়ে অপরাজিত ৪৮ রানের ঝড়ো ইনিংস, আগা সালমানের ১৬ বলে ৩ চারের সাহায্যে ২৭ রানের কল্যাণে ৩১৪ রান করতে সক্ষম হয় কোচ সাকলাইন মুস্তাকের দল।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নেদারল্যান্ডসও পাক বোলারদের কঠিন পরীক্ষা নিয়েছে। তিন ফিফটিতে জয়ের স্বপ্নও দেখেছিলো স্বাগতিকরা। কিন্তু অভিজ্ঞতার কাছে শেষ পর্যন্ত হারতে হয় তাদের। অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। ব্যাট হাতে খেলেন ৬০ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ে অপরাজিত ৭১ রানের ইনিংস।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অভিষেক ম্যাচে প্রথম ওভারেই উইকেট পান তরুণ পেসার নাসিম শাহ। তিনি মাক্স ও’ডাউডকে এলবির ফাঁদে ফেলেন। এর কিছুক্ষণ পর ওয়েসলি বারেসির অফ স্টাম্প উপড়ান হারিস। তবে তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে নেদারল্যান্ডস। পাক বোলারদের উপর চড়াও হয়ে দ্রুত এগোচ্ছিলেন কুপার। সেই সঙ্গে সচল রাখছিলেন রানের চাকাও। রউফের বলে ব্যাটের কানায় লেগে বাবরের হাতে কুপার ধরা পড়লে ভাঙে ৯৭ রানের জুটি। যেখানে কুপারের অবদান দুই ছক্কা ও ছয় চারে ৫৪ বলে ৬৫। কুপারের বিদায়ের ৮ রান পর বিদায় নেন নওয়াজের শিকারে পরিণত হন বিক্রমজিত। তার আগে ৯৮ বলে ৫ চারে করেন ৬৫ রান।
এরপর একাই লড়াই চালিয়ে যান নেদারল্যান্ডসের নতুন অধিনায়ক এডওয়ার্ডস। নতুন নেতৃত্বের স্বাদ অর্ধশত দিয়ে পূরণ করেন তিনি। ৬০ বলে খেলেন ৭১ রানের চমৎকার ইনিংস খেলে পাকিস্তানের মনে ভয় ধরিয়ে দেন তিনি। তবে যোগ্য সঙ্গীর অভাবে জয়ের বন্দরে পৌছতে পারেননি তিনি। ২৯৮ রানেই থেমে যায় স্বাগতিকদের ইনিংস।
পাকিস্তানের হয়ে অভিষিক্ত নাসিম শাহ ৫১ রান খরচ করে ৩ উইকেট শিকার করেন। পেসার হারিস রউফও উইকেট শিকার করেন ৩টি। ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি করা ফখর জামান জিতেছেন ম্যাচসেরা পুরস্কার।