এবি পার্টি (আমার বাংলাদেশ পার্টি) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে সীতাকুণ্ড বিস্ফোরণের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার এবং তেল, গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের উপুর্যুপুরি মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার (৭ জুলাই) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলের যুগ্ম সদস্য সচিব ও মহানগর দক্ষিণ শাখার আহ্বায়ক বিএম নাজমূল হক।
সমাবেশে সীতাকুণ্ড বিস্ফোরণের সুষ্ঠু তদন্ত, দোষীদের বিচার, নিহতদের পরিবার ও আহত-ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং তেল, গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের উপুর্যুপুরি মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির আহ্বায়ক সাবেক সচিব এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মন্জু, যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, এবি যুব পার্টির সমন্বয়ক এবিএম খালিদ হাসান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব আনোয়ার সাদাত টুটুল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সোলায়মান চৌধুরী অবিলম্বে সীতাকুণ্ড অগ্নিকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে বলেন, বিস্ফোরণ ও আগুনে পোড়া অসহায় মানুষ যখন হাসপাতালে কাতরাচ্ছে তখন সরকার অবিবেচকের মতো পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে শত কোটি টাকা অপচয়ের আয়োজন করে যাচ্ছে। তিনি বলেন দুর্নীতি ও সরকারী অর্থ অপচয় বন্ধ করে হতাহতের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ করুন, নইলে অবৈধভাবে আঁকড়ে থাকা গদি ছেড়ে দিন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, একটা বড় দুর্ঘটনা ঘটলে বুঝা যায় দেশের কতোটুকু উন্নয়ন হয়েছে। আমাদের আগুন নেভানোর পর্যাপ্ত শক্তি নাই, লঞ্চডুবি থেকে মানুষকে রক্ষার উপায় উপকরণ নাই, বিল্ডিং ধ্বসে পড়লে অসহায় মানুষকে উদ্ধারের কোনো প্রযুক্তি নাই! তাহলে পঞ্চাশ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি জনগণের জন্য রাজনীতি করেছে সেকথা কীভাবে বলা যায়? মূলতঃ বাংলার মানুষকে ঠকিয়ে এরা সবাই নিজেদের আখের গুছিয়েছে।
তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, দূর্যোগে মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ক্রয় করে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গুলোকে প্রযুক্তিগতভাবে আরো সমৃদ্ধ করুন। নাহয় ৮০’র দশকে মানুষ শ্লোগান দিত আটারুটি স্বাক্ষী আছে আর যাবোনা নৌকার কাছে। এই সরকারের দূঃশাসন দুর্নীতি ও অপরিসীম ব্যর্থতার কারণে এবারের পতনের পর মানুষ শ্লোগান দেবে সীতাকূন্ড স্বাক্ষী আছে আর যাবো না নৌকার কাছে।
ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আজকের এই দিনে স্বাধীনতার অন্যতম মূলমন্ত্র ছয়দফা ঘোষণা করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করেছিলেন। আজ আমাদের লজ্জা হয় সেই আওয়ামীলীগের কাছে আমাদের আন্দোলন করতে হয় মানুষের ভাত ভোটের অধিকারের জন্য। যখন বিস্ফোরণের পর বিস্ফোরণে মানুষ হতবিহ্বল সেই সময়ে এই সরকার গ্যাস বিদ্যুৎের দাম বাড়িয়ে মানুষের হৃদয়ে আগুন লাগিয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে বিএম নাজমুল হক বলেন, এবি পার্টি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে। যতোদিন এই দেশে গণতন্ত্র, মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা না হবে, অরাজকতার মূলোৎপাটন না হবে আমাদের সংগ্রাম চলবে। তিনি অবিলম্বে সীতাকুণ্ড দূর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারী সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর হোসেন, যুবনেতা এম ইলিয়াস আলী, জাতীয় জনতা ফোরাম কেন্দ্রীয় সংসদের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক মোহাম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদার, মহানগর দক্ষিণের অন্যতম নেতা আনোয়ার ফারুক, আব্দুল হালিম খোকন, গাজী নাসির, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব ফিরোজ কবির, ছাত্র বিভাগের সমন্বয়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, নারী নেত্রী সুলতানা রাজিয়া, মহানগর দক্ষিণের নেতা শাহজাহান ব্যাপারী, আব্দুল হালিম নান্নু, শফিউল বাসার, নারী নেত্রী শীলা আক্তার, আমেনা বেগম, ফেরদৌসী আক্তার অপি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিনহাজুল আবেদীন শরীফ, যুবনেতা হাদিউজ্জামান, মাসুদ জমাদ্দার রানা, তোফাজ্জল হোসেন রমিজ, মহানগর উত্তরের সেলিম খান, দক্ষিণের কেফায়েত হোসেন তানভীর, আব্দুল মান্নানসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
সমাবেশ শেষে মজিবুর রহমান মঞ্জু, বিএম নাজমুল হক ও আসাদুজ্জামান ফুয়াদের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিন করে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।