কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে নদীর কূল ছাপিয়ে উপচে পড়া পানি ও হড়কা বানে বাড়িঘর ধসে যায়, রাস্তা ভেঙে পড়ে ও বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়ে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে জার্মানিতে সবচেয়ে ভয়াবহ এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে অন্তত ১৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে কোলন শহরের দক্ষিণে আভাইলা জেলায় প্রায় ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে শনিবার জানিয়েছে পুলিশ।
বন্যায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া বেশ কয়েকটি এলাকার কয়েকশ লোক এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অথবা তাদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। কিছু এলাকার সঙ্গে টেলিযোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে।
আভাইলার ব্যাড নয়েনা-আভাইলা শহরের এক ওয়াইন দোকানের মালিক মিশায়েল লাং বলেন, “সবকিছু পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। আপনি কোনোকিছু আর চিনতে পারবেন না।”
জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভল্টার স্টাইনমায়ার শনিবার অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য নথস রিনে-ভেসপালিয়ার এফস্ট্যাড শহর পরিদর্শন করেছেন। এখানে বন্যায় অন্তত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কোলনের নিকটবর্তী বাসেনবার্গ শহরে একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর শুক্রবার রাতে স্থানীয় প্রায় ৭০০ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ওই রাতের পর থেকে পানির স্তর নামতে শুরু করেছে বলে বাসেনবার্গ শহরের মেয়র জানিয়েছেন।
পশ্চিম জার্মানির স্টাইনবাখথাইল বাঁধ ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে থাকায় নিম্নাঞ্চলের বাড়িগুলোতে থেকে প্রায় সাড়ে চার হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ মূল্যায়ন করতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে বলে প্রেসিডেন্ট স্টাইনমায়ার জানিয়েছেন। এসব ক্ষতি সারিয়ে তুলতে পুনর্নির্মাণে বেশ কয়েক বিলিয়ন ইউরোর তহবিল দরকার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চ্যান্সেল অ্যাঙ্গেলা মের্কেল রোববার আরেক ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য রিনেল্যান্ড পালাটিনাট পরিদর্শনে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। হড়কা বানে রাজ্যটির শোয়েজ গ্রাম প্রায় বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।
বন্যায় বেলজিয়ামে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ জনে দাঁড়িয়েছে বলে দেশটির জাতীয় দুর্যোগ কেন্দ্র জানিয়েছে।
কেন্দ্রটি আরও জানায়, তাদের এখানে ১০৩ জন ‘নিখোঁজ রযেছেন অথবা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না’। মোবাইল ফোন রিচার্জ করতে না পারায় এদের অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না বা তারা পরিচয়পত্র ছাড়াই হাসপাতালে ভর্তি থাকতে পারেন বলে জানিয়েছে তারা।