স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন- উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ, জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবিলা এবং পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগে গ্রিন বন্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এছাড়া ডেল্টা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্য পূরণে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি দেশে গ্রিন বন্ডের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
সোমবার (১৩ জুন) রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে বিশ্বব্যাংক আয়োজিত ‘গ্রীন বন্ড অপরচুনিটি ফর মিউনিসিপ্যাল অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়েস্ট ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সারা বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধরিত্রীকে রক্ষার জন্য প্রতিটি দেশ এবং পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমান সরকারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশকে রক্ষায় কাজ করছে। উন্নত দেশে গ্রীন বন্ড নিয়ে কাজ করলেও আমাদের দেশে এখন এটি চালু করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ইতোমধ্যে নতুন এ বন্ডের অনুমোদন দিয়েছে।
তাজুল ইসলাম জানান, দেশের মানুষ এই বন্ড সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত নয়। সেই জন্যই আজকের এই আয়োজন। আমি আশা করি এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মানুষ গ্রীন বন্ড সম্পর্কে জানবে এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে। বাংলাদেশ ডেল্টাপ্ল্যান থেকে শুরু করে টেকসই উন্নয়ন ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার বিষয়গুলো গ্রিন বন্ড ট্যাক্স গাইডলাইনে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, উদ্যোক্তাদের গ্রিন বন্ডের জন্য সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে প্রজেক্ট জমা দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। এরপর সেই প্রজেক্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেয়া হবে। তারপর যেকোনো দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী এখানে বিনিয়োগ করতে পারবেন। এখানকার বিনিয়োগ একদিকে যেমন পরিবেশ রক্ষা হবে অন্যদিকে বিনিয়োগকারীরা লাভবানও হবেন।
তিনি বলেন, পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগে আরও বেশি করে উৎসাহিত করতেই গ্রিন বন্ড চালুর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এই বিনিয়োগকে উৎসাহ দেওয়ার অন্যতম কারণ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত ও কার্বনের নিঃসরণ দ্রুত কমিয়ে আনাসহ সবুজায়ন প্রকল্পের দিকে মোড় নেওয়া। সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভাসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে গ্রীন বন্ড চালু করার উপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
মন্ত্রী জানান, পরিবেশ দূষণে গৃহস্থলী, শিল্প-কলকারখানা ও কঠিন বর্জ্য বিরূপ প্রভাব ফেলে তাই এসব ময়লা-আবর্জনা পুড়িয়ে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে যাচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশন, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
সরকার দূষিত পানি রিসাইক্লিং করে ব্যবহারযোগ্য করার কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন জাপান, কোরিয়া, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরসহ উন্নত দেশসমূহ পানি রিসাইক্লিং করছে। বাংলাদেশও তাদের মত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে পানি ব্যবহার উপযোগী করতে কাজ করছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম এবং ২০৩০ ওয়াটার রিসোর্সেস গ্রুপের প্রোগ্রাম ম্যানেজার পরোমেশ্বর আইয়্যার।
এছাড়া, কর্মশালায় ঢাকা ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী তাকসিম এ খান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুজ্জামান কিরণ, স্থানীয় সরকার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধি, পৌরসভার মেয়র অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।