বিএনপিকে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে আগামী নির্বাচনে আসতে হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাচিপ আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ কথা বলেন।
সরকারকে টিকিয়ে রাখতে নির্বাচন কমিশন ইভিএম পদ্ধতি নিয়েছে বলে বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে, তার জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “মির্জা ফখরুল সাহেব সরকারের পরিবর্তন যদি চান সোজাসুজি কথা হলো, পরিষ্কার বক্তব্য হলো, নির্বাচনে আসতে হবে। নির্বাচন ছাড়া সরকার পরিবর্তনের আর কোনো সুযোগ নেই। এ কথা সে কথা বলে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন, নির্বাচনের আধুনিক পদ্ধতি, টেকনোলজিতে বিশ্বাস করেন না।’’
“পরীক্ষামূলকভাবে স্থানীয় সরকারের অনেকগুলো নির্বাচন এই ইভিএমে হয়েছে। এগুলো কি প্রশ্নবিদ্ধ ছিল? বলুন? সিটি করপোরেশন গুলোতেও হয়েছে, সিলেটে হয়েছে, বরিশালে হয়েছে, কুমিল্লাতে হয়েছে। কেউ কি কোনো প্রশ্ন করেছে? আমরা জালিয়াতিমুক্ত, কারচুপি মুক্ত নির্বাচন চাই। সিল মারামারি নির্বাচন চাই না। সে জন্যই ইভিএম চাই। যারা সিল মারামারি নির্বাচনে অভ্যস্ত, যারা নির্বাচন বলতে কেন্দ্র দখল, যারা নির্বাচন বলতে ব্যালট পেপারে সিল মারা, এটা বোঝে, যারা নির্বাচন বলতে ভোট কারচুপি বোঝে, ভোট জালিয়াতি বোঝে, তারা ইভিএমকে সমর্থন অনেকেই করে না। আমি বিএনপির কথাই বলছি।’’
বিএনপির মনে আসলে কী জানতে চেয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “তারা একদিকে বলে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার না হলে নির্বাচনে আসবে না আবার বলে, ইভিএমে আসবে না, ইভিএম চান না। তাহলে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে কেন গেলেন না? ওখানে গিয়ে বলতেন। তাহলে আপনাদের মনে কি? আপনাদের মনে কোন খেলা? কোন চক্রান্তের খেলা? কি চান আপনারা? নির্বচন চান না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার উচ্চ আদালতের রায়ে বিদায় নিয়েছে, আবার সেখানে যেতে চান? দুনিয়ার অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, এখানেও রুটিন দায়িত্ব নিয়ে সরকার নির্বাচনে সহযোগিতা করবে। আর নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে।’’
বিএনপি নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনে আসবে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আসবেন (নির্বাচনে), আসতে হবে, অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চাইলে আসতে হবে। আমরা কারও দয়ায় টিকে থাকতে চাই না। জনগণ আমাদের ক্ষমতার উৎস। জনগণ ভোট দিয়ে আমাদের নির্বাচিত না করলে আমরা বিদায় নেব। আমরা কারও দয়ায় বা নির্বাচন কমিশনের ইভিএম দিয়েছে, এইসব দেখে আমরা রাজনীতি করি না। পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই।’
বর্তমান সরকারের কাছ থেকে জনগণ মুক্তি চায় বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণ মুক্তি চায় না, মুক্তি চায় বিএনপি। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার। একটা পদ্মা সেতুতেই কাত হয়ে গেছে। একটা পদ্মা সেতুতেই আপনাদের বুকের ব্যথা বেড়ে গেছে। সামনে মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্ণফুলি টানেল, সামনে এলিভেটেড এক্সপ্রেস, আরও কত প্রকল্প।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাচিপের শাখার সভাপতি ডা. আবু নাসার রিজভীর সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও বিএমএ’র সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, কেন্দ্রীয় স্বাচিপের সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সনাল, সাধারণ সম্পাদক এম এ আজিজ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।