শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:১৫ পূর্বাহ্ন

বড় ধরণের গণঅভ্যুত্থান হতে পারে, সরকারও জানে : মান্না

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : জুন ৯, ২০২২

বাংলাদেশে একটা বড় ধরণের গণঅভ্যুত্থান হতে পারে, যেটা আমরা না জানলেও সরকার জানে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

বৃহস্পতিবার (৯জুন) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘তৃণমূল নাগরিক আন্দোলন আয়োজিত’ ভোটের অধিকার রক্ষায় আমাদের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মান্না বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় একটি রাজনৈতিক দল। আমরা তাদের নেতৃত্বে আন্দোলন করতে চাই। এক্ষেত্রে সঠিক নেতৃত্ব প্রয়োজন। তারা ১৪ বছর ক্ষমতার বাইরে। তারা এখন বলছে ক্রান্তিকাল চলছে। এই ক্রান্তিকালকে যদি আমরা ব্যবহার করতে না পারি তাহলে কাঙ্খিত ফলাফল ঘরে আনা যাবে না। বাংলাদেশে একটা বড় ধরণের গণঅভ্যুত্থান হতে পারে, যেটা আমরা না জানলেও সরকার জানে। সরকার গতকাল বুধবার হঠাৎ করে বড় একটা শোডাউন করেছে। কিন্তু এ ধরণের শোডাউন করে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না।

মান্না বলেন, আমরা রাজনৈতিক দল মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারি না। এটা পারে সরকার। এজন্য এমন একটি সরকার দরকার যে সরকার জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারবে। বর্তমানে এমন একটি সরকার রয়েছে যারা ভোট চুরি, ভোট ডাকাতি ছাড়া অন্য কিছু বোঝে না। বিগত একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আমাদের আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা থাকা সত্বেও ফলাফল ঘরে আনতে পারিনি। কারণ বর্তমান সরকার রক্ষক হয়েও ভক্ষকের ভূমিকা পালন করেছে। সেই নির্বাচনে আওয়ামী আর প্রশাসন এক হয়ে নির্বাচন করেছে।

তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের লালদিঘীতে বলেছিলেন যারা এরশাদের অধীনে নির্বাচনে যাবে তারা জাতীয় বেঈমান। তারপরের দিনই তিনি নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর থেকে আমরা ওই দলকে জাতীয় বেঈমান হিসেবেই জানি।

সরকার দেশটাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে দাবি করে মান্না বলেন, এখন কোনো অঘটন ঘটলেই বলে নাশকতা। তারা উদোরপিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপায়। অন্যায় করে একজন, শাস্তি ভোগ করে আরেক জন। আমি দীর্ঘদিন ওই দলটিতে ছিলাম বিতৃষ্ণা চলে এসেছে। আমি দেখেছি, কি অন্যায়, কি অবিচার, কিভাবে একটি রাজনৈতিক দল ভাঙতে হয়, কিভাবে আন্দোলন বানচাল করতে হয়, সহ্য হয়নি। এরা শুধু মানুষকে কষ্ট দিতেই জানে। বুকের ভিতরে কষ্ট নিয়ে একা একা হেটে চলে এসেছি।

তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলন কিন্তু ব্যর্থ হয়নি। এ সরকার ভোট ডাকাতি করেছে এটাই আমাদের জয়। কারণ এরা যে দুর্নীতিবাজ, জালিমশাহী সরকার তা জনগণের কাছে চিহ্নিত করতে পেরেছি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আহবায়ক আবদুস সালাম বলেন, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পক্ষে কারা আছে। আর কারা ক্ষমতায় আসলে স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব বিলিন হয়, গণতন্ত্র কারাবন্দি হয়, তা জনগণের কাছে চিহ্নিত। স্বাধীনতার পরেও আমরা দেশ গড়তে পারিনি। তখনও সেই গণতন্ত্রহীনতা, দুর্নীতি, অরাজকতা সারাদেশে ছেয়ে গিয়েছিল। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পরে দেশের মানুষ স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রকৃত স্বাদ ও উন্নয়নের ছোঁয়া পেয়েছিল। ঠিক তেমনিভাবে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ক্ষমতা ছাড়ার পরে দেশে একই কায়দায় একনায়কতন্ত্র, বাক-স্বাধীনতা হরণ শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আজ বন্দি, তারেক রহমান ফেরারী, তারেক রহমানের স্ত্রীও যেন দেশে আসতে না পারে সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। কয়দিন পর তারা জাইমা রহমানের বিরুদ্ধেও মামলা দিয়ে সেও যেন দেশে না আসতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে পারে। সরকার সব সময় জিয়া পরিবারের ভয়ে আতঙ্কে থাকে।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ মফিজুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ২০ দলীয় জোট নেতা খন্দকার লুৎফর রহমান, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, মাওলানা এবিএম আসাদুল হক, মো. ফরিদ উদ্দিন, এম মাহবুবুর রহমান ভূইয়া, রমজান আলী, আব্দুল হান্নান এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু প্রমুখ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ