শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন

প্রদীপের ২০ ও স্ত্রীর ২১ বছরের কারাদণ্ড

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : জুলাই ২৭, ২০২২
প্রদীপের ২০ ও স্ত্রীর ২১ বছরের কারাদণ্ড

অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় বরখাস্ত ওসি প্রদীপকে ২০ বছর ও তার স্ত্রী চুমকিকে ২১ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আজ বুধবার (২৭শে জুলাই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ মুন্সী আব্দুল মজিদ এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

দুদকের মামলার আইনজীবী চট্টগ্রাম আদালতের পিপি মাহমুদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ২৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালতে এই রায় দিয়েছেন। আদালত প্রদীপকে ২০ বছর এবং তাঁর স্ত্রী চুমকিকে ২১ বছর কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে প্রদীপের ঘুষের টাকায় চুমকির নামে নেওয়া কোটি টাকার বাড়ি, গাড়ি ও ফ্ল্যাট রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় প্রদীপ ও চুমকি-দু’জনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামালা সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পত্তি অর্জনের মামলা করেন। গত বছরের ২৬ জুলাই প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। এতে বলা হয়, পাথরঘাটায় ছয়তলা বাড়ি, ষোলশহরের বাড়ি, ৪৫ ভরি সোনা, একটি করে কার ও মাইক্রোবাস, ব্যাংক হিসাব এবং কক্সবাজারের একটি ফ্ল্যাটের মালিক প্রদীপের স্ত্রী চুমকি কারণ। তাঁর ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিপরীতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকার। তাঁর ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের সত্যতা পেয়েছে দুদক।

এ ছাড়া চুমকি নিজেকে মৎস্য ব্যবসায়ী দাবি করলেও এর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। সম্পদ বিবরণীতে চুমকি বোয়ালখালীতে থাকা খামারের মাছের ব্যবসা থেকে ২০০২ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে দেড় কোটি টাকা আয় দেখিয়েছেন। কিন্তু তা আয়কর রিটার্নে উল্লেখ নেই। চুমকি ভুয়া মাছের ব্যবসা দেখিয়েছেন।

চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় ছয়তলা বাড়ি, ষোলশহরে একটি বাড়ি, ৪৫ ভরি স্বর্ণ, একটি কার ও মাইক্রোবাস, কক্সবাজারের একটি ফ্ল্যাটের মালিক প্রদীপের স্ত্রী চুমকি। প্রদীপের ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থে স্ত্রী চুমকি এসব সম্পদ অর্জন করেন বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে উঠে এসেছে। এছাড়া চুমকি নিজেকে মাছ ব্যবসায়ী দাবি করলেও তার কোনো প্রমাণ পায়নি দুদক।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রদীপের স্ত্রীর নামে থাকা গাড়ি, বাড়ি ও ব্যাংক হিসাব রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে রাখার জন্য গত বছরের ২৯ শে জুন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ নির্দেশ দেন। একই বছরের ১৫ই ডিসেম্বর প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামলার বিচার শুরু হয়। ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। ১৮ই জুলাই যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।

২০২০ সালের ৩১শে জুলাই রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর মেরিনড্রাইভ চেক পোস্টে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় একই বছরের ৬ আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন ওসি প্রদীপ। সিনহা হত্যা মামলায় প্রদীপকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ