শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপিতে নজিরবিহীন বহিষ্কার

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : জুন ১৪, ২০২২

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ওয়ার্ড সম্মেলনে ‘বিশৃঙ্খলা’ সৃষ্টির অভিযোগে স্থানীয় ১৪ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই ঘটনায় দলের অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের আরও ১২ থেকে ১৫ জন নেতাকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের চিঠিও সংশ্লিষ্ট সংগঠনের মাধ্যমে যেকোনো সময় দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও সদস্য সচিব আমিনুল হক এই বহিষ্কারাদেশ অনুমোদন দিয়েছেন। যদিও এই বহিষ্কারাদেশ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।

একাধিক সূত্র এটি নিশ্চিত করেছে যে, এই পুরো বহিষ্কারের প্রক্রিয়াটি দলীয় গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি হয়েছে। এদের কাউকেই কারণ দর্শানোর নোটিশ এমনকি তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে তাদের সাথে কথা বলা বা আত্মপক্ষ সমর্থনের ন্যূনতম অধিকারটুকুও দেওয়া হয়নি।

বহিষ্কার হওয়া নেতাদের দাবি, ইউনিট কমিটি গঠনে নগরের দেওয়া নির্দেশনা না মানায় প্রতিবাদের মুখে পড়েন নগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক। প্রতিবাদের সময় মারধর বা লাঞ্চিত করার মত কোনও ঘটনা ঘটেনি। প্রতিবাদের মুখে আমিনুল হক ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে চাইলে প্রতিবাদকারীরা তার গাড়ীর সামনে শুয়ে পড়ে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখেন। যার স্পষ্ট ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। শুধুমাত্র প্রতিবাদ করার কারনে এতজন নেতার বহিষ্কার উচিত হয়নি।

এ দিকে নগর উত্তর বিএনপির একজন প্রভাবশালী নেতা প্রতিবেদককে বলেন, বহিষ্কার আদেশ সঠিক বলে মনে হয়নি। এ ধরনের আদেশ বা বিজ্ঞপ্তি বিএনপিতে নজিরবিহীন এবং গঠনতন্ত্র পরিপন্থী।

তিনি বলেন, গত ১১ জুন নগরের দেওয়া চিঠিতে সংশ্লিষ্ট ১৪জন নেতাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার না করে তাদের উত্তর বিএনপির সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, অথচ বহিষ্কৃত ১৪ নেতা ওই দিন কোন পদেই ছিলেন না। তারা সবাই বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং থানার সাবেক নেতা। তাই সাংগঠনিক পদ থেকে কিভাবে বহিষ্কার প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।

সেদিন ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন উত্তরা পশ্চিম থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল হৃদয়। তিনি বলেন, ‘আমরা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা মেনে রাজনীতি করি। কাউকে বাদ দিয়ে নয়; সবাইকে নিয়ে রাজনীতিতে বিশ্বাসী তিনি। কিন্তু উত্তরাতে যা হয়েছে তা একতরফা হয়েছে। আমরা কয়েকশ’ নেতাকর্মী উপস্থিত হয়ে সমন্বয় করতে বলেছিলাম। সেখানে আমিনুল ভাইয়ের সঙ্গে কেউ কোনো অসৌজন্যমূলক ব্যবহার করেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের মাধ্যমে তদন্ত করে সঠিক তথ্য জানতে পারলে তিনি বিগত আন্দোলন সংগ্রামে আমাদের ভূমিকার কারণে বহিষ্কার নয়; পুরষ্কৃত করবেন।’।

বহিষ্কাকৃত নেতারা হলেন- উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান খোকন, সদস্য জাকির হোসেন, ৫১ নং ওয়ার্ডের সাবেক আহ্বায়ক মনসুর আহম্মেদ, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ হোসেন জাহাঙ্গীর, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, বিমানবন্দর থানা বিএনপির নেতা এস এম নুরুল ইসলাম নুরু, দক্ষিণ খান থানার ৪৭ নং ওয়ার্ডের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহম্মেদ, ৪৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক বিল্লাল হোসেন বিজয়, ৪৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাওসার আহম্মেদ রনি, বিমান বন্দর থানা বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট শফিক ও সাবেক নেতা জালাল, উত্তরা পূর্ব থানা ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরান মাহমুদ, উত্তরা পূর্ব থানা বিএনপির সাবেক নেতা মিজান পাটোয়ারী।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ