ইন্দো-প্যাসেফিক অঞ্চলে চীনের সামরিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তারের কারণে দেশটিকে সতর্কতা জানাতে জাপান, ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতারা মঙ্গলবার টোকিওতে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন।
কোয়াড (কোয়াড্রিলিটারেল সিকিউরিটি ডায়ালগ) নামে পরিচিত গ্রুপের শীর্ষ সম্মেলনের একদিন আগে জো বাইডেন তাইওয়ানকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হস্তক্ষেপে প্রস্তত থাকবে বলে ঘোষণার জবাবে চীন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ‘আগুন নিয়ে খেলছে’।
আশা করা হচ্ছে মঙ্গলবারের এই সম্মেলন কম উত্তেজনা ছড়াবে তবে এখনো স্পস্টভাবে এর লক্ষ্য চীনকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হবে।
কোয়াড সম্মেলনের শুরুতে বাইডেন বলেছেন, ‘এটি গণতন্ত্র বনাম স্বৈরাচার প্রশ্ন, আমাদের নিশ্চিত করতে হবে আমরা কী ভূমিকা পালন করবো।’
চীনা সামরিক আক্রমণাত্মক তৎপরতা, নৌ মহড়া এবং মাছ ধরার জাহাজের অনধিকার প্রবেশসহ চীনের সামরিক কর্মকান্ডে আঞ্চলিক অস্থিরতা বাড়ছে যা আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকি এবং বিপজ্জনক সীমা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
সলোমন দ্বীপপুঞ্জসহ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য গত মাসে বেইজিংয়ের সাথে একটি বিস্তৃত নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষরকে উদ্বেগের বিষয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই সপ্তাহে সলোমন দ্বীপপুঞ্জ সফর করবেন। রিপোর্টে ধারণা প্রকাশ করা হয়েছে যে, তিনি ভানুয়াতু, সামোয়া, টোঙ্গা এবং কিরিবাতিসহ অন্যান্য দেশগুলোকে ওই নিরাপত্তা চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
এই উদ্বেগের প্রতি সমর্থন জানিয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা কোয়াড সদস্যদের প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জসহ আঞ্চলিক প্রতিবেশীদের কথা ‘মনযোগ দিয়ে শোনার’ এবং ‘তাদের মুখোমুখি হওয়া তাৎক্ষণিক চ্যালেঞ্জগুলো সমাধানে সহায়তার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে একসাথে চলা ছাড়া কোয়াড সফল হতে পারে না।’
অস্ট্রেলিয়ার নব-নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ ‘আমাদের প্রতিরক্ষা এবং সামুদ্রিক সহযোগিতা’ গভীর করতে সহায়তাসহ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর জন্য আরো সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেছেন, আঞ্চলিক সামুদ্রিক গতিবিধি নিরীক্ষণের জন্য কোয়াড দেশগুলো মঙ্গলবার সম্মত হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছে।
কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেছেন, আঞ্চলিক দেশগুলো জলসীমায় এবং একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলে কী ঘটছে ‘প্রধান উদ্যোগ’ ট্যাক করা হবে।
বাইডেন, কিশিদা, আলবেনিজ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটি ঐক্যফ্রন্ট উপস্থাপন করতে চাইবেন। তবে পর্দার আড়ালে বিভাজন রয়েছে।
ভারতই একমাত্র কোয়াড সদস্য দেশ যে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা করেনি। বাইডেন বার বার মস্কোর প্রতি কঠোর পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলছেন, চীনের মতো অন্য দেশগুলো রাশিয়ার আগ্রাসনকে একতরফা সামরিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনায় বাধা সৃষ্টি করছে।