শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন

ইতালিকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : জুন ২, ২০২২

ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন এবং লাতিন আমেরিকার চ্যাম্পিয়নের মধ্যে কে সেরা? তারই উত্তর খোঁজার এক আলোচিত ম্যাচ ফাইনালিসসিমা। এ বছরের এই ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিলো ইউরোপসেরা ইতালি এবং কনমেবলের বিজয়ী আর্জেন্টিনা। কিন্তু মেসিদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি আজ্জুরিরা। ৩-০ গোলে জিতে আরেকটি শিরোপার স্বাদ নিয়েছেন মেসি।
বছরখানেক আগে লন্ডনের ওয়েম্বলি মাঠে ইউরো জয়ের উৎসব করেছিল ইতালি, সে মাঠে নিজেদের ফেরাটা রাঙাতে পারল না তারা। আক্রমণাত্মক ফুটবলে পুরোটা সময়ই আধিপত্য করল আর্জেন্টিনা। ইউরোপ চ্যাম্পিয়নদের হারানোর মধ্য দিয়ে লিওনেল স্কালোনির দলের মুকুটে যোগ হলো নতুন পালক।

ওয়েম্বলিতে দুটি গোল হয় প্রথমার্ধে। লাউতারো মার্তিনেস দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। শেষ দিকে তৃতীয় গোলটি করেন পাওলো দিবালা।

এই ম্যাচ দিয়েই ইতালির হয়ে সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন ১১৮ ম্যাচ খেলা জর্জো কিয়েল্লিনি। তার শেষটা হলো হারের হতাশায়।

ধীর গতিতে শুরু হওয়া ম্যাচটি ১৫ মিনিটের দিকেই গতি পায়। প্রথম ২০ মিনিটে দুই দল একটি করে হাফ-চান্স পায়, যদিও তার কোনোটিই প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের পরীক্ষা নেওয়ার মতো ছিল না। তবে ২৫তম মিনিটে লিওনেল মেসির শট প্রতিহত হয়। তিন মিনিট পর ডি-বক্সে দারুণ পজিশনে বল পেয়েও গোলরক্ষক বরাবর দুর্বল শট নিয়ে হতাশ করেন পিএসজি তারকা।

পরক্ষণেই অসাধারণ নৈপুণ্যে দলকে এগিয়ে নেন মেসি। তিনি গোলদাতা না হলেও মূল অবদান তারই। সতীর্থের পাস ধরে বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন মেসি। আরও খানিকটা এগিয়ে গোলমুখে বল বাড়িয়ে দিলে বাকি কাজ সারেন মার্তিনেস।

পাল্টা জবাব দেওয়ার সুযোগ পেলেও নিকোলো বারেল্লা বক্সের বাইরে থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে না পারায় গোলশূন্য থাকে ইতালি। এরপর প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে দ্বিতীয় গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে নেয় মেসিরা।

এবার মার্তিনেসের কোনাকুনি উড়িয়ে দেয়া থ্রু বলটি আয়ত্ত্বে নেন ডি মারিয়া। চোখের পলকে বক্সে ঢুকে প্রথম ছোঁয়ায় চিপ শটে আগুয়ান গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন পিএসজিকে বিদায় জানানো এই মিডফিল্ডার।

দ্বিতীয়ার্ধের পর থেকে বেশ কিছু আক্রমণ করে আর্জেন্টিনা। তবে গোলরবক্ষক আর ডিফেন্ডারের প্রচেষ্টায় কয়েকবার রক্ষা পায় ইতালি। প্রবল চাপ ধরে রেখে পরের কয়েক মিনিটে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে আর্জেন্টিনা। মেসির কয়েকটি শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন দেরান্নুমা।

অবশেষে দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে গিয়ে তৃতীয় গোলের দেখা মেলে। মাঝমাঠ থেকে দারুণ গতিতে আক্রমণে উঠে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে বলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন মেসি।ভেতরে ঢুকে নিচু কোনাকুনি শটে জালে পাঠান লো সেলসোর বদলি নামা দিবালা।

ম্যাচের পুরো সময় ইতালিকে কোণঠাসা করে রাখা আর্জেন্টিনা গোলের উদ্দেশ্যে মোট ১৯টি শট নেয়, যার মধ্যে আটটি ছিল লক্ষ্যে। স্কোরলাইন আরও বড় না হলেও সেখানে মেসি ও তার সতীর্থদের দাপটের প্রমাণ পরিষ্কার।

এই ম্যাচে দারুণ একটি রেকর্ডও গড়েছে লা আল বাসিলেস্তারা। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে কোনো ম্যাচ না হারা দলটি এই নিয়ে টানা ৩২ ম্যাচ অপরাজিত রইল। নিজেদের ইতিহাসে তাদের আগের রেকর্ড ছিল ৩১ ম্যাচের, ১৯৯১ থেকে ১৯৯৩ সালের মধ্যে করেছিল তারা।

ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন ও কোপা আমেরিকা জয়ীর মধ্যে এমন ম্যাচের আয়োজন আগেও দুবার হয়েছে; ১৯৮৫ সালের প্রথম ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে ফ্রান্স জিতেছিল ২-০ গোলে আর ১৯৯৩ সালে ডেনমার্কের বিপক্ষে ১-১ ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে জয়োল্লাস করেছিল আর্জেন্টিনা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ