দ্বিতীয় দফা বন্যার ধকল কাটিয়ে না উঠতেই সিলেট ও সুনামগঞ্জের নদ-নদীগুলোতে আবারো বাড়ছে পানি। থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় সুরমা, কুশিয়ারাসহ কয়েকটি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে ফের প্লাবিত হয়েছে সিলেট শহরের নিচু এলাকা। বন্যাদুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। আবারও পানি বাড়তে শুরু করেছে লালমনিরহাট, রংপুর ও কুড়িগ্রামে তিস্তা ও ধরলা নদীর।
সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রায় প্রতিটি উপজেলায় যেদিকেই চোখ যায়, শুধু পানি আর পানি। ফসল, ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট একাকার পানিতে। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি আরেকদফা বেড়েছে। ফলে সপ্তাহখানেক আগে পানি নেমে যাওয়া এলাকা আবারো ডুবতে শুরু করেছে। কিছু এলাকায় ঘরবাড়িতেও পানি ঢুকে পড়েছে।
গেলো দু’দিনের বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের সুরমা, যাদুকাটা, রক্তি ও পাটলাই নদীর পানি বেড়েছে। সুরমা নদীর পানি ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে কিছু এলাকা। জেলার নিম্নাঞ্চলে এখনো পানিবন্দী বহু মানুষ।
বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে বন্যা। এতে দুর্ভোগ বেড়েছে বন্যাকবলিত মানুষদের। সরকারি ত্রাণের পাশাপাশি ব্যাক্তি উদ্যোগে ত্রাণ বিলি করছে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। তবে নেত্রকোণায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বাড়িঘর ও সড়কে পানি থাকায় জেলার বহু মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে। ১০ উপজেলায় ৬৪ হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি।
লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার এবং ধরলায় ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। সানিয়াজান, সতী, রত্নাই নদীর পানি বাড়ায় জেলার ১৫টি গ্রামের ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দী। তলিয়ে গেছে বিভিন্ন ফসল। গবাদি পশু নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন বন্যাদুর্গতরা।
কুড়িগ্রামে ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বিপদসীমার উপরে। বাড়ছে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানিও। জেলার অন্তত ৬০টি চর ও নদী সংলগ্ন গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার পাট, ভুট্রা, বীজতলা ও সবজি ক্ষেত ডুবে গেছে। বন্যাদুর্গতদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ ও চিকিৎসা সেবা দিয়েছে পুলিশ ও বিজিবি।
গেলো দিনে সারাদেশের মধ্যে ফেনীতে সর্বোচ্চ ৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামি ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামের অধিকাংশ জায়গায় মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।