তিন মাসের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম প্রতি টনে কমেছে ১৭৫ ডলার। বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধির সময় বাংলাদেশে দাম বেড়েছিল। বিশ্ববাজারে মূল্য কমেছে কিন্তু বাংলাদেশে কমেনি তেলের দাম। উল্টো বাড়ছে।
গত মার্চে বিশ্ববাজারে প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম হয় ১৯৫৬ ডলার। এপ্রিলে তা কমতে শুরু করে। প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম হয় ১৯৪৭ ডলার। বর্তমানে প্রতি টন সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৮১ ডলারে। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে প্রতি টন সয়াবিন তেলে দাম কমেছে ১৭৫ ডলার।
সয়াবিন তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে এতখানি কমে যাওয়ায় গত ২ জুন সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমছে। এখন দেশের বাজারেও তা কমবে।
তার এ বক্তব্যের ৬ দিন পর ৯ জুন নতুন করে প্রতি লিটার ভোজ্যতেল সর্বোচ্চ ৭ টাকা বাড়িয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নতুন দাম কার্যকর করে। ফলস্বরূপ ৫ মে বৃদ্ধি করা নির্ধারিত মূল্য ১৯৮ এর জায়গায় প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের মূল্য দাঁড়ায় ২০৫ টাকায়। খোলা সয়াবিন তেল যা ৫ মে মূল্য বৃদ্ধি করে নতুন মূল্য ধরা হয়েছিল ১৮০ টাকায় তার মূল্য দাঁড়ায় প্রতি লিটার ১৮৫ টাকা।
এর আগে গত ২০ মার্চে বোতলজাত সয়াবিন তেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৬০ টাকা আর খোলা তেলের মূল্য ছিল প্রতি লিটার ১৩৬ টাকা। ২০ মার্চ থেকে ৫ মে-প্রায় দেড় মাসের ব্যাবধানে সয়াবিন তেলের মূল্য বাড়ানো হয় খোলা তেল প্রতি লিটারে ৪৪ টাকা এবং বোতলজাত ৩৮ টাকা।
কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম যখন বেড়েছিল তখন পণ্যটি আমদানিতে সরকারের পক্ষ থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার ছাড়াও বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা এসব সুবিধা নিয়ে আমদানি করে তেল দেশের বাজারে আনেন। তাতে দাম কমার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে কমেনি। এখন বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমেছে, কিন্তু দেশে বাড়ানো হচ্ছে। এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না, যাতে ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্র জানায়, বিশ্ববাজারে দাম খুব একটা কমেনি। সামান্য কিছু কমেছে। কিন্তু আমদানিতে তার প্রভাব এখনই পড়বে না। কারণ দেশে ডলারের দাম বেড়ে গেছে। এ ছাড়া এই দামের সঙ্গে জাহাজ ভাড়াসহ আনুষঙ্গিক খরচ যুক্ত হয়। তবে ভোজ্যতেলের দাম বিশ্ববাজারে কমে এলে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে দেশের বাজারে দাম পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’