২০২০ সালের তুলনায় দেশে চলতি বছরের ছয় মাসে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। করোনা আক্রান্ত এবং আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঊর্ধ্বমুখী এ প্রবণতা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে বিশেষজ্ঞ এবং স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের।
সোমবার (৫ জুলাই) পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ হাজার ২২৯ জন এবং করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৯ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮১ জন।
২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছিল সাত হাজার ৫৫৯ জনের এবং সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল পাঁচ লাখ ১৩ হাজার ৫১০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত বছরের সঙ্গে চলতি বছরে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা তুলনা করে দেখা যায়, চলতি বছরের ছয় মাসেই মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ৬৭০ জনের, যা গত এক বছরের থেকেও বেশি। পাশাপাশি চলতি বছরের ছয় মাসে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৪১ হাজার ৩৭১ জন।
করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করে হেলথ অ্যান্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুটাই ছিল অনেক আগ্রাসী। করোনার নতুন ধরন অনেক দ্রুত ছড়াচ্ছিলো। মানুষ জন আক্রান্ত হওয়ার পরপরই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছিলো। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দেশে আসার পর দ্রুতই সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে আমরা যেসব রোগী পাচ্ছি তার প্রায় অর্ধেকই গ্রামাঞ্চলের। যেখানে আগে করোনায় শহরাঞ্চলের রোগী বেশি ছিল। এবার গ্রাম অঞ্চলের রোগীর সংখ্যাই বেশি। বর্তমানে করোনা দেশব্যাপী সব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। এমতাবস্তায় করোনা যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে ভারতে যেভাবে আমরা মৃত্যুর মিছিল দেখেছি আমাদের দেশেও সেই অবস্থা তৈরি হবে।
করোনা পরিস্থিতি প্রতিরোধ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ডা. লেলিন বলেন, বর্তমানে সারা দেশব্যাপী যে ‘লকডাউন’ চলছে, সেটাকে আমাদের সর্বাত্মকভাবে সফল করতে হবে। ব্যক্তি পর্যায়ে মাস্ক পরা, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং নিয়মিত হাত ধোয়াকে আমাদের প্রতিদিনের অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। একই সঙ্গে যত বেশি সম্ভব টিকা জোগাড় করে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দেশের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষকে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারলে আমরা এই ভয়ঙ্কর বিপদ থেকে রক্ষা পাবার পথ খুঁজে পাবো।