এবারের বাজেটে ব্যাংক থেকে ১ লাখ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার কথা ভাবছে সরকার। যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ১৬ শতাংশ বেশি। সরকারের ঋণ বাড়ানোর এই ইঙ্গিতে অনেকটাই নির্ভার ব্যাংক নির্বাহীরা। তবে ঋণ বৃদ্ধির পরিকল্পনা বিনিয়োগের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।
মে-জুন মাসে দেশজুড়ে আলোচনায় থাকে জাতীয় বাজেট। অর্থের হিসাবে যা বাড়ছে প্রতি বছর। তার চেয়েও বেশি হারে বাড়ছে ঘাটতি। আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটও ব্যতিক্রম নয়। ধারণা করা হচ্ছে, বছর ব্যবধানে ঘাটতি বাড়তে পারে ১৪ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। যা সমন্বয়ে নির্ভরতা বাড়বে ব্যাংক খাতের ওপর।
চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ব্যাংক থেকে সরকারি ঋণ দেখানো হয় ৮৭ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা। আসছে বাজেটে এই ঋণ ছাড়িয়ে যেতে পারে ১ লাখ কোটি টাকা। ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়াই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন এই খাতের নির্বাহীরা।
সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান বলেন, বৈদেশিক ঋণগুলোর সুদ কম হলেও কিছু জটিলতা আছে। আর স্থানীয় পর্যায় থেকে তা নিলে দেশের অর্থ দেশেই থাকবে। ফলে এতে কোনও সমস্যা থাকবে না।
রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। বিশেষ করে পেট্রোলিয়ামের দাম ৩ গুণ বেড়েছে। এতে ডলারের ওপর চাপ বেড়েছে। এ অবস্থায় বিদেশ থেকে ঋণ নিলে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে তা শোধ করতে হতো। দেশের অভ্যন্তর থেকে নিলে সে জটিলতা থাকে না।
যদিও অর্থনীতিবিদদের অভিযোগ বেসরকারি বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানেই পড়বে এর নেতিবাচক প্রভাব।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ব্যাংকারদের দিক থেকে এ পদক্ষেপকে বাহ্বা দেয়া খুবই স্বাভাবিক। কারণ, তারা চায় কম ঝুঁকি ও বেশি রিটার্ন। ৭ থেকে ৮ শতাংশে যদি ঋণ দেয়া যায়, তাহলে ৮/৯ শতাংশে ঝুঁকি দিয়ে তা দেয়ার দরকার নেই। সেদিক থেকে ব্যক্তিখাতে যাদের ঋণের চাহিদা আছে, সেক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়বেই।
আগামী অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা হবে আগামী ৯ জুন। যেখানে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। বছর ব্যবধানে ঘাটতি বাড়তে পারে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা।