করোনা সংক্রমণ রোধে দেশে চলছে কঠোর ‘লকডাউন’। পঞ্চমদিনের ‘লকডাউন’ চলছে কিছুটা ঢিলেঢালাভাবে।
সকালে মানুষের চলাফেরা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়কে জরুরি সেবা, ব্যক্তিগত যানবাহন ও রিকশা চলাচল বাড়তে থাকে।
সোমবার (০৫ জুলাই) সকাল থেকেই রাজধানীর মিরপুর ১৪, ১২, ১১, ১০, ২ নম্বর এলাকার পাড়া-মহল্লা ও বাসস্ট্যান্ড এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
সেনপাড়া এলাকার বাসিন্দা নুরুন্নবী। মোবাইল ফোনে ফ্লেক্সিলোড করতে মাস্ক না পরেই ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন। তিনি বলেন, মাস্ক না পরে ঘর থেকে বের হওয়ায় কাফরুল থানা পুলিশ আমাকে তুলে নিয়ে আসে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায়। আমার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয় পুলিশ। তারা (পুলিশ) বলেন, ‘লকডাউনে’র মধ্যে ভবিষ্যতে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হলেই গ্রেফতার করা হবে।
রজ্জব আলী মিরপুর ৬ নম্বর এলাকা থেকে এসেছেন ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায়। ব্যাংক থেকে টাকা তুলবেন বলে। এসে দেখেন ব্যাংক বন্ধ। ব্যাংক ৭ জুলাই খুলবে। তিনি বলেন, রোববার টাকা তোলার জন্য এ ব্যাংকে এসেছিলাম, তখনো কোনো নোটিশ ব্যাংক বোর্ডে লাগানো হয়নি। সোমবার সকালে এসে দেখি ব্যাংকের নোটিশ বোর্ডে বলা হয়েছে ৭ জুলাই ব্যাংক খোলা হবে। এ নোটিশটা গতকাল দিলে কী হতো? আমার শুধু শুধু এ ‘লকডাউনে’ ঘর থেকে বাইরে বের হতে হলো। অহেতুক হয়রানি।
বাদাম বিক্রেতা মো. সোহেল। গাবতলী গুদারাঘাট থেকে হেঁটে হেঁটে এসেছেন মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায়। তিনি বলেন, সকাল ৯ টায় বাসা থেকে বের হয়েছি। ‘লকডাউনে’র প্রথম তিনদিন ঘর থেকে বের হইনি। রোববার থেকে বের হওয়া শুরু করেছি। আমার আশপাশের লোকজন সবাই বের হয়, তাই আমিও বাসা থেকে বের হয়েছি।
সোহেল বলেন, আগে বাদাম বেচা-কেনা ভালোই হতো। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হাজার দেড় হাজার টাকার বাদাম বিক্রি করতাম। ‘লকডাউনে’ ৫০০ টাকার মতো বেচা-বিক্রি হয়। কি আর করব, পেটের দায়ে আর বাবা-মায়ের জন্য ঘর থেকে বের হয়ে এসেছি। খেয়ে-পরে বেঁচে থাকতে তো হবে। রাস্তায় পুলিশ দৌড়ানি দিলে এলাকার অলি গলিতে ঢুকে পালিয়ে যাই। এভাবেই বিক্রি করছি বাদাম।
মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর চেকপোস্টে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, রাজধানীতে ব্যক্তিগত ও জরুরি সেবার যানবাহন কোথা থেকে আসছে এবং কোথায় যাবে জিজ্ঞেস করে চেকপোস্ট থেকে ছাড়া হচ্ছে। যারা যুক্তিযুক্ত কারণ দেখাতে না পারছে, তাদের জরিমানা করা হচ্ছে। সকাল থেকে পাঁচটি মামলা করা হয়েছে।