প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, তাঁর সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার হচ্ছে দেশের প্রতিটি প্রান্ত থেকে তৃণমূল পর্যায়ের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা এবং এ জন্য তারা পরিকল্পিতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের গ্রামীণ উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, কারন তৃণমূলের জনগণকে পেছনে ফেলে কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব নয়।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘আজিজুল হক পল্লী উন্নয়ন পদক-২০২১” (আজিজুল হক পল্লী উন্নয়ন পুরস্কার-২০২১) গ্রহণকালে এ কথা বলেন।
সেন্টার অন ইন্টিগ্রেটেড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক (সিরডাপ) গ্রামীণ উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রীকে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারে ভূষিত করেছে।
সিরডাপের মহাপরিচালক ড. চেরদসাক ভিরাপা প্রধানমন্ত্রীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, পল্লী উন্নয়ন নিশ্চিত হলেই দেশ কাঙ্খিত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জন করবে, এটাই তাঁর সরকারের বিশ্বাস।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে থাকা অবস্থায়ও প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে এবং সে কারণেই ক্ষমতায় আসার পর পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে।
‘আমার বাড়ি, আমার খামার’ প্রকল্প সম্পর্কে সরকার প্রধান বলেন, এটি তাঁর নিজস্ব চিন্তা ভাবনার ফসল, যা বেকার দরিদ্র মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে সহায়তা করেছে এবং সেখানে তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করেছে।
এ লক্ষ্যে তিনি চর কুকরি মুকরি নামে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে শুরু হওয়া ডিজিটাল সেন্টারের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি আরো বলেন, সরকার এখন আমার বাড়ি, আমার খামার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে, যাতে গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী মানুষ নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে এবং অন্যদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।
গ্রামীণ জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিকের কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা, একটি এলাকায় অন্তত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়াসহ তার সরকারের বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরেন।
তিনি আরও বলেন, সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করতে, সরকার প্রতি দুই কিলোমিটারে একটি করে হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করছে যাতে শিশুরা পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তাঁর সরকার প্রাথমিক শিক্ষা ও নারী শিক্ষাকে অবৈতনিক করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও উপবৃত্তি প্রদান ও তাদের জন্য অন্যান্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, সরকার গ্রামীণ জনগণের জন্য নিরাপদ পানীয় জল এবং মানসম্মত স্যানিটেশন সুবিধার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং আবাসনসহ অন্যান্য মৌলিক চাহিদাগুলিও নিশ্চিত করেছে।
‘আমরা প্রায় শতভাগ স্যানিটেশন এবং বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহে সক্ষমতায় পৌঁছেছি,’ তিনি যোগ করেন, শতভাগ শিশু এখন স্কুলে যাচ্ছে।
জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনা বলেন, দরিদ্র গৃহহীনদের জমির মালিকানা দিয়ে বাড়ি দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা কর্মসংস্থান পেতে পারে, অন্যদিকে সরকার দরিদ্র দুস্থদের জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন ভাতা দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ‘আজিজুল হক পল্লী উন্নয়ন পদক-২০২১’ সম্মানে ভূষিত করার জন্য সিরডাপ এবং এর পরিচালনা পর্ষদকে ধন্যবাদ জানান এবং পুরস্কারটি দেশবাসীকে উৎসর্গ করেন।
‘ আমাকে সিরডাপ কর্তৃক ‘আজিজুল হক পল্লী উন্নয়ন পদক ২০২১’ প্রদান করায় আমি মনে করি এটা আমার বাংলাদেশের জনগণের প্রাপ্য। আমি তাদের জন্য এ পদক উৎসর্গ করছি। এ পদক প্রাপ্তির জন্য আমাকে মনোনয়ন করা মানে বাংলাদেশকে মনোনয়ন করা,’ তিনি যোগ করেন।