শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:২৪ অপরাহ্ন

একনেকে উঠছে ৫৮৮৪ কোটি টাকার ‘ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন’

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : নভেম্বর ২৩, ২০২১

ডিজিটাল সংযোগ স্থাপনে ৫ হাজার ৮৮৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘এস্টাবলিশিং ডিজিটাল কানেকটিভিটি’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। একনেক কার্যপত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারের সেবাসমূহকে ই-সেবায় রূপান্তরের মাধ্যমে জনগণের কাছে দ্রুত ও সহজে পৌঁছে দেওয়া এবং সবক্ষেত্রে আইসিটির ব্যবহার বাড়াতে প্রয়োজনীয় আইসিটি অবকাঠামো স্থাপন করা হবে এ প্রকল্পের মাধ্যমে।

একনেকে অনুমোদন পেলে প্রকল্পটি সারা দেশে বাস্তবায়ন করা হবে। এ প্রকল্পে সরকারি তহবিল থেকে আসবে দুই হাজার ৫০৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা। চীন সরকার ঋণ হিসেবে দেবে ৩ হাজার ৩৭৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। অনুমোদন পেলে চলতি বছরের জুলাই থেকে জুন ২০২৫ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতর।

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম

(১) এক লাখ ৯ হাজার ২৪৪টি ব্রডব্যান্ড অ্যান্ড ইউজার কানেকটিভিটি স্থাপন (২) ১০ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন (৩) ৫৭টি বিশেষায়িত ল্যাব, সেন্ট্রাল ক্লাউড প্লাটফর্ম এবং ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি সেন্টার অব এক্সিলেন্স স্থাপন (৪) জেলা ও উপজেলা কমপ্লেক্সে আইটি অবকাঠামোসহ এলএএন এনওসি (নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টার), প্রশিক্ষণ সুবিধাদি, ৫৫৫টি ডিজিটাল সার্ভিস অ্যান্ড ইমপ্লোজমেন্ট ট্রেনিং সেন্টার (ডিএসইটি), মাঠ পর্যায়ের ক্লাউড ফাইল সার্ভিস এবং ডিজিটাল স্টোরেজের জন্য কেন্দ্রীয় সার্ভার অবকাঠামো স্থাপন (৫) আইসিটি ল্যাব, স্মার্ট ভার্চুয়াল ক্লাসরুম এবং ডিসট্যান্স লার্নিং প্ল্যাটফর্মসহ প্রয়োজনীয় আইসিটি অবকাঠামো সুবিধা সম্বলিত একটি ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার স্থাপন, (৬) সিভিল রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড ভাইটাল স্ট্যাস্টিকস বাস্তবায়নের নিমিত্ত সিআরভিএস সেন্টার আইএসডিপি সার্ভার স্থাপন, মাঠ পর্যায়ে পাঁচ হাজার ৫০০টি এনরোলমেন্ট অবকাঠামো স্থাপন এবং ১৭ হাজার ৩১৪টি সার্ভিস ডেলিভেরজ ডিভাইস বিতরণ (৭) ১০টি ডিজিটাল ভিলেজ স্টেশন স্থাপন, (৮) ৪৯২টি অনাবাসিক ভবন নির্মাণ, একটি ২১ তলা বিশিষ্ট ডিওআইসিটি টাওয়ার নির্মাণ, উপজেলা শেয়ারড আইসিটি অপারেশন সেন্টারের জন্য উপজেলা বিল্ডিংয়ের একতলা ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ ৪৯১টি, (৯) ১০টি ডিজিটাল ভিলেজ স্টেশনের আওতায় ফিল্ড সার্ভে, ২০ হাজার কৃষককে স্মার্ট সেন্সর ডিভাইস প্রদান, (১০) ছয়টি মোটরযান ক্রয় (দুটি জিপ, দুটি মাইক্রোবাস, দুটি ডাবল কেবিন পিকআপ) (১১) ২৮ ক্যাটাগরির পরামর্শক সেবা ক্রয়, (১২) কম্পিউটার এক্সেসরিজ ও সফটওয়্যার সংগ্রহ (১৩) ১০২টি অফিস ইক্যুপমেন্ট ও ৩ লাখ ৬১ হাজার ৭৮২টি ফার্নিচার সংগ্রহ, (১৪) বৈদেশিক প্রশিক্ষণ (বৈদেশিক ভেন্যু : ৪০ জন, বাংলাদেশ ভেন্যু : তিন হাজার ৩৩৫ জন), স্থানীয় প্রশিক্ষণ : ১৬ হাজার ৮২১ জন, (১৫) সেমিনার ও কনফারেন্স আয়োজন এবং (১৬) বিভিন্ন পর্যায়ের ৪৯ জন জনবল নিয়োগ ইত্যাদি।

পরিকল্পনা কমিশন জানায়, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় উচ্চ প্রবৃদ্ধির জন্য প্রযুক্তিসমূহের উন্নয়ন, অবকাঠামো নির্মাণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিল্পবের সুবিধা লাভের জন্য নীতি ও কৌশল নেওয়ার সার্বিক নির্দেশনা রয়েছে।

এছাড়া ডিজিটাল অর্থনীতি বাস্তবায়ন ও মানবসম্পদ বিকাশের লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে আধুনিক আইসিটি ল্যাবে সজ্জিতকরণ, স্বচ্ছতা, সুশাসন ও জনগণের কাছে সেবা সরবরাহ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বরান্বিত করা, আইসিটিভিত্তিক মানসম্পন্ন শিক্ষার প্রসার এবং তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জনশক্তি বিনির্মাণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ বিবেচনায় প্রকল্পটি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।

পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের সব সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উচ্চগতিসম্পন্ন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত হবে। প্রান্তিক পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রযুক্তি ব্যবহার ও চর্চা বাড়বে। এছাড়া চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রয়োজনীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন ও গবেষণা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, সরকারি সেবা স্বচ্ছ ও সহজ করার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করতে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সার্বিক অর্থে সকল নাগরিকের জন্য ডিজিটাল সেবা গ্রহণ, জ্ঞানভিত্তিক দক্ষ সমাজ গঠন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রকল্পটি সহায়ক হবে। এজন্যই একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ