আর কিছু সময় পরেইপাকিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণের ‘অগ্নি পরীক্ষায়’ মাঠে নামবে টাইগাররা। প্রায় দুই বছর পর বাংলাদেশ আজ খেলতে নামবে গ্যালারির গর্জনের মুখে। করোনা পরিস্থিতি শান্ত থাকায় দর্শক প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। ধারণক্ষমতার ৫০ শতাংশ দর্শক মাঠে প্রবেশ করতে পারবেন এই সিরিজে। বড়দের টিকা সনদ দেখিয়ে মাঠে প্রবেশ করতে হবে। বাচ্চারা যেহেতু এখনো টিকা পায়নি, তাদের জন্য এ শর্ত প্রযোজ্য নয়। সমর্থকদের সমর্থনে, গর্জনের মুখে বাংলাদেশ নামছে অগ্নি পরীক্ষায়। লাল সবুজের প্রতিনিধিরা কি পারবে সামর্থ্যের জানান দিতে?
যদিও বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়েছেন দলে না থাকা ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে। এতেও স্পষ্ট মাঠের চেয়ে বাইরের বিষয় নিয়ে বেশি চর্চা হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর সময় তখনো ২৪ ঘণ্টার বেশি বাকি। বাবর আজম সংবাদ সম্মেলন শুরু করলেন ১২ জনের দল ঘোষণা করে। পাকরা যে আত্মবিশ্বাসী কিংবা ফুরফুরে মেজাজে আছেন- এই এক ঘোষণাতেই বোঝা যায়।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর বাংলাদেশের এখন ঘুরে দাঁড়ানোর পালা, মঞ্চও প্রস্তুত। বিশ্বকাপের বিরহ যাত্রা কাটিয়ে উঠার একমাত্র পন্থা, একমাত্র অবলম্বন। না হয় হতাশার চাদরে আরও মুড়িয়ে যাবেন মাহমুদউল্লাহ-মোস্তাফিজুর রহমানরা।
‘হ্যাঁ, এটা অবশ্যই বিশ্বকাপের পর আমাদের বড় একটা চ্যালেঞ্জ এই সিরিজে ভালো ক্রিকেট খেলা এবং সামর্থ্যের প্রমাণ দেওয়ার জন্য ভালো একটা সুযোগ’- সিরিজ শুরুর আগে ঠিক এভাবেই বলেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজকে চ্যালেঞ্জ মনে করে নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণের সুযোগ দেখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আসলে এটা সুযোগ বললে ভুল হবে। অগ্নি পরীক্ষাই যথার্থ শব্দ।
শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) দুপুর ২টায় মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মাহমুদউল্লাহর দল অগ্নিপরীক্ষায় নামবে বাবরের দলের বিপক্ষে।
আক্ষরিক অর্থে নিজেদের ডেরায় আজ এক নতুন বাংলাদেশকে দেখা যাবে। চেনা আঙিনায় যেন অচেনা। দলে ডাক পেয়েছেন সাইফ হাসান, শহীদুল ইসলাম, আকবর আলী ও ইয়াসির আলী রাব্বি। দলে ফিরেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। অর্থাৎ ছয় জন নতুন সদস্য।
সাকিব আল হাসান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন নেই ইনজুরির কারণে। লিটন দাস-সৌম্য সরকার বাদ পড়েছেন বাজে পারফরম্যান্সের কারণে। মুশফিকুর রহিমকে নির্বাচকরা বিশ্রাম দেওয়ার কথা বললেও তিনি জানিয়েছেন তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আর পেসার রুবেল হোসেন দলের সঙ্গে থেকে না খেলেও পাকিস্তান সিরিজে দলে জায়গা পাননি। তাদের নিয়ে উড়তে থাকা বাবরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে হবে নতুন সেনা নিয়ে।
তাদের ওপর অগাধ আস্থা রেখে মাহমুদউল্লাহ বলেনে, ‘ইয়াং টিম এটা কিছুটা চ্যালেঞ্জের তো হবেই। তবে চাপের কিছু নেই এতে। তবে এটা চ্যালেঞ্জিং একটা সিরিজ হবে। আমি পার্টিকুলারলি বিশ্বাস করি টি-টোয়েন্টি এমন একটা খেলা যেখানে আপনার সেরা একাদশ থাকে ও উইকেট ভালো থাকে তাহলে ভালো কিছু আশা করতে পারেন আপনি।’
নতুন ৬ সদস্য দলে আসায় একাদশ বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা যাবে। এই ম্যাচে ভালো উইকেটের প্রত্যাশা করেছেন অধিনায়ক। ‘উইকেট ভালোই মনে হল। আমি আশা করি এটা ভালো উইকেট হবে।’
বেশ ভালো প্রস্তুতি চলছে। যতটা সময় মিলেছে, কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। দু’একদিন বৃষ্টি হওয়ায় প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটেছে বটে। তবে যতটা সময় মিলেছে, আমরা কাজে লাগিয়েছি। আত্মবিশ্বাস দারুণ দলের। মোমেন্টাম আছে আমাদের। নিজেদের শক্তির জায়গায় থাকব এবং বিশ্বকাপে যে ধরনের ক্রিকেট খেলেছে, সেটিই ধরে রাখার চেষ্টা করব।
এদিকে পাকিস্তান দলে দেখা যেতে পারে স্কোয়াডে থাকা অনিয়মিত কাউকে। তবে বাবর হালকাভাবে নিচ্ছেন না বাংলাদেশকে। ‘৬ ম্যাচে বিভিন্ন ক্রিকেটারকে দেখব আমরা। যে মোমেন্টাম আমরা পেয়েছি, যে ব্যাপারটি দেখা গেছে, তা পুরোপুরি উপেক্ষা করা যাবে না। মূল ক্রিকেটারদের বসিয়ে রাখা যাবে না। কারণ এরপর টেস্ট সিরিজও আছে। তাছাড়া এটা ওদের হোম সিরিজ। কাজেই ওদেরকে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না। কয়েকজন ক্রিকেটার নেই, তবে যারা আছে তারাও কম নয়। বিপিএল খেলে ওরা সবাই। ওদেরকে সহজভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই।’