শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৬ অপরাহ্ন

ধর্মঘটের তৃতীয় দিন: ভোগান্তিতে অফিসগামীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : নভেম্বর ৭, ২০২১

জ্বালানি তেলের দাম ‍বৃদ্ধির কারণে  ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘট চলছে শুক্রবার (৫ নভেম্বর) থেকে। শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় রাজধানীতে যাত্রীদের চাপ কিছুটা কম ছিল। ভোগান্তি থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া গুণে রিকশা, সিএনজি কিংবা ভাড়ায় চালিত মোটরবাইকে কোনোরকম ‘ম্যানেজ’ করে নিয়েছিলেন রাজধানীবাসী। তবে আজ রোববার (৭ নভেম্বর) সরকারি অফিস, আদালত, ব্যাংকসহ সবধরনের প্রতিষ্ঠান খোলা। তাই রাজধানীতে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও যানবাহন মেলেনি অফিসগামীদের। গত দুদিন কিছুটা বাড়লেও আজ সিএনজি-রিকশার ভাড়া ঠেকেছে কয়েকগুণ পর্যন্ত। দুদিনেই সরকারের পক্ষ থেকে কোনও সমাধান না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকেই।

সকালে সরেজমিনে রাজধানীর শাহবাগ, বাংলামোটর, পান্থপথ ও ফার্মগেট এলাকা ঘুরে অফিসগামীদের ভোগান্তির চিত্র দেখা যায়।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বগতির কারণে ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ডিজেল-কেরোসিনের দাম পুনর্নির্ধারণ করেছে সরকার। গত বুধবার (৩ নভেম্বর) রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। নতুন দাম ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়েছে। যা ওইদিন রাত ১২টা থেকে কার্যকর হয়।

ডিজেল-কেরোসিনের দাম বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরদিনই পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এরপর শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল ছয়টা থেকে পূর্বঘোষণা ছাড়াই রাজধানীসহ সারাদেশে শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট।

ধর্মঘটের প্রথম দিন থেকেই রাজনীতিকে কর্মব্যস্ত মানুষের ভোগান্তি চোখে পড়ে। অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টায় বাসস্টপেজগুলোতে অপেক্ষা করেও গাড়ির দেখা পাচ্ছিলেন না। গাড়ি পেলেও ভাড়া নেওয়া হচ্ছিল দ্বিগুণ-তিনগুণ। তবে শুক্রবার ছুটির দিনে কিছুটা ঢিলেঢালা থাকলেও গতকাল শনিবার চিত্রটা ছিল ভিন্ন। আগের দিনের চেয়ে নগরবাসীর ভোগান্তিও বাড়ে কয়েকগুণ।

আর ধর্মঘটের তৃতীয় দিন রোববার (৭ নভেম্বর) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, অনেকে অফিসের নির্দিষ্ট রোডে কোনো বাস না থাকায় আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘন্টাও অপেক্ষা করছেন। যখনই বিআরটিসির বাস থামছে, অফিসগামীরা সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। কেউ আবার বাসের নাগাল পেতে দৌড়ুচ্ছেন।

সকালে শাহবাগে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত নেহা আক্তার। তিনি বলেন, বনানীতে অফিস। বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। সাধারণত বাসেই অফিসে যাতায়াত করি। আজ কোনো বাস পাচ্ছি না। রিকশায় এতোদূর যাওয়া সম্ভব নয়। বাস না পেলে শেষ পর্যন্ত পাঠাওয়ে যেতে হবে।

সেখানেই আল মামুন নামের অপর এক অপেক্ষমান যাত্রী জানান, সাইনবোর্ড যাবো। সাধারণত পাবলিক বাসেই যাই। বাস বন্ধ। কিভাবে যাবো বুঝতেছি না।

ফার্মগেট এলাকায় কথা হয় অফিসগামী তামজিদ হোসেনের সঙ্গে। গুলশান-২ এ তার অফিস। তিনি বলেন, আধা ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি, কোনো গাড়ি পাচ্ছি না। অফিসে যেতে দেরি হয়ে যাবে আজ।

এদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকার সুযোগে রাস্তায় চলাচলকারী বিআরটিসিসহ রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ভাড়ায় চলা মোটরসাইকেল নিচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।

মিরপুর থেকে ফার্মগেটে অফিস করতে আসা জাবের মাহমুদ বলেন, সাধারণত মিরপুর-১ থেকে বাসে আসতাম ফার্মগেট। বাস বন্ধ, কিন্তু অফিসতো করতে হবে। পাঠাওয়ে এসেছি দেড়শ টাকা ভাড়া দিয়ে।

মো. জসীম উদ্দিন নামের আরেকজন বলেন, বাসে দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছে। আগে পাঁচ টাকা দিয়ে মহাখালী থেকে ফার্মগেট আসতাম, এখন নিচ্ছে ১০ টাকা।

ওই রুটেই চলাচলকারী আরেক যাত্রীর অভিযোগ, বিআরটিসিতে আগে শাহবাগ থেকে বনানী যেতে ১৫ টাকা ভাড়া নিতো, এখন নিচ্ছে ২০ টাকা।

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে বিআরটিসি বাসের কন্ট্রাক্টর আনোয়ার হোসেন জানান, পরিবহন বন্ধ থাকায় আমাদের বেশি টাকা জমা দিতে হচ্ছে। কিছু করার নেই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ