রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দেশে গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর এই দুই মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৭০৮টি। এতে মোট নিহত হয়েছেন ৮৪৬ জন এবং আহত ১ হাজার ৫৭ জন। নিহতের মধ্যে নারী ১২১ ও শিশু ৯২ জন। এছাড়া ৩০৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ৩৪৮ জন, যা মোট নিহতের ৪১ দশমিক ১৩ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) ‘রোড সেফটি ফাউন্ডেশ’ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এতথ্য জানানো হয়েছে। ৭টি জাতীয় দৈনিক, ৫টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনায় ১৯৪ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২২ দশমিক ৯৩ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৯১ জন, অর্থাৎ ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই সময়ে ১৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় ২৮ জন নিহত, ৯ জন আহত এবং ১৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া ৩২টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৩০১টি জাতীয় মহাসড়কে, ২৩১টি আঞ্চলিক সড়কে, ১০৫টি গ্রামীণ সড়কে, ৬১টি শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ১০টি দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এই বিভাগে ১৭৮টি দুর্ঘটনায় নিহত ২০১ জন। সবচেয়ে কম রংপুর বিভাগে। সেখানে ৪৬টি দুর্ঘটনায় নিহত ৫৫ জন। একক জেলা হিসেবে ময়মনসিংহ জেলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ময়মনসিংহে ৩৪টি দুর্ঘটনায় ৪৯ জন নিহত হন। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘঠেছে রাঙ্গামাটি জেলায়। সেখানে ৩টি দুর্ঘটনা ঘটলেও কেউ হতাহত হয়নি।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান জানান, ট্রাক ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ড্রাইভারদের বেপরোয়া গতিতে ট্রাক চালানো এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে তারা নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছেন এবং অন্যান্য যানবাহনকে আক্রান্ত করছেন। পথচারী নিহতের মাত্রাও চরম উদ্বেগজনক পর্যায়ে। পথচারীরা যেমন সড়কে নিয়ম মেনে চলেন না, তেমনই যানবাহনগুলোও বেপরোয়া গতিতে চলে। ফলে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে।