রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সাইবার আইনের প্রত্যাহার হচ্ছে ৫৮১৮ মামলা নদী দূষণমুক্ত করা গেলে পরিবেশ উন্নত হবে ২৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক অফিস আদালত খুলেছে, যানচলাচল স্বাভাবিক ছাগলকাণ্ডে মতিউর ও তার স্ত্রী এবং সন্তানদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত বরুড়ায় মামার বিরুদ্ধে ভাগিনার প্রতারণার গুরুতর অভিযোগ! মোশারফ প্যারিস অলিম্পিকে ডাক পেলেন অলিম্পিক রিংয়ে সাজবে আইফেল টাওয়ার প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা! বরিশাল প্লে-অফে শক্তিশালী হচ্ছেন রওশন, দুর্বল জিএম কাদের! খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মিনিট পরপর চলবে মেট্রোরেল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন ৪৮ নারী প্রার্থী সিরিজ নির্বাচন করতে চায় ইসি

ঢাবির শতবর্ষ উদযাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : জুলাই ১, ২০২১

আজ হতে ঠিক শতবর্ষ আগে এই দিনেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। ব্রিটিশ শাসনামলে পিছিয়ে পড়া পূর্ববঙ্গের মুসলামানদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবঙ্গ রদের পর ১৯২১ সালের ১ জুলাই প্রতিষ্ঠা করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থার অনুকরণে প্রণয়ন করা হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, এফ সি টার্নার, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, জিএইচ ল্যাংলি, হরিদাস ভট্টাচার্য, স্যার এ এফ রহমান, পিজে হার্টগ, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, রমেশচন্দ্র মজুমদার, নরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত, জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাকসহ খ্যাতিমান শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় উচ্চশিক্ষার এই প্রতিষ্ঠানটি অল্প দিনে পরিচিতি পায় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে।
একাডেমিক এক্সিলেন্সির পাশাপাশি দেশের ক্রান্তিকালেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে দেশসেরা এই বিদ্যাপীঠ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ, ৯০’র স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, ২০০৭ এর ১/১১ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়। সফলও হয়েছিল ।

স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান অনন্য হলেও গবেষণায় মান ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে শতবর্ষী অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অবস্থান নিতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। তাই নতুন পথচলায় গবেষণা ও উদ্ভাবনমূলক জ্ঞান বিতরণ ও বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাংকিংয়ে অগ্রগতিই চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, শতবর্ষ উপলক্ষে মাস্টারপ্ল্যান নেয়া হয়েছে। সেটির কার্যকর ও বাস্তবায়নই মূল চ্যালেঞ্জ। গবেষণা, উদ্ভাবন ও শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন সমান গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণার জন্য যেমন অর্থের প্রয়োজন তেমনি অনুকূল পরিবেশেরও দরকার আছে। র‌্যাংকিংয়ে অগ্রগতির জন্য আমরা বিদেশি শিক্ষকদের সম্পৃক্ততা, শিক্ষার্থী ভর্তি, গবেষকদের প্রণোদনাসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছি। এসব ক্ষেত্রেই অর্থের চাহিদা রয়েছে। সব কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করাই আগামীর চ্যালেঞ্জ।

চলমান করোনা মহামারি পরিস্থিতি বিবেচনায় দিবসটি উপলক্ষে ক্যাম্পাসে স্বশরীরে কোনো অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়নি। তবে অনলাইনে প্রতীকী কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হয়। নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীত পরিবেশন, জাতীয় পতাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন উড্ডয়নের মাধ্যমে দিবসটির প্রতীকী কর্মসূচি শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রতীকী কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, প্রক্টর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং সীমিত সংখ্যক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শতবর্ষ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শুভানুধ্যায়ীসহ সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, জ্ঞান আহরণ ও বিতরণের গৌরবগাঁথা নিয়ে শতবর্ষ পাড়ি দিয়েছে আমাদের প্রাণপ্রিয় এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। চলমান নভেল করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে মূল অনুষ্ঠানের অগ্রবর্তী অনুষ্ঠান হিসেবে দিবসটিকে আজ প্রতীকী কর্মসূচির মাধ্যমে উদযাপন করতে হচ্ছে। এ উপলক্ষে বিকেল ৪টায় অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চ্যুয়াল ক্লাসরুমে এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে মূল বক্তা হিসেবে সংযুক্ত থাকবেন বিশিষ্ট ভাষাসৈনিক, কলামিস্ট ও বুদ্ধিজীবী সর্বজন শ্রদ্ধেয় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। তিনি ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ: ফিরে দেখা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন।
উপাচার্য আরও বলেন, শতবর্ষের বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ মূল অনুষ্ঠান আগামী ১ নভেম্বর ২০২১ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শতবর্ষের মূল অনুষ্ঠান উদ্বোধন করতে সানুগ্রহ সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।
দিবসটি উপলক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান কার্জন হল প্রাঙ্গণে একটি বুদ্ধ নারিকেল গাছের চারা রোপণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষে শত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিরও উদ্বোধন করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ