২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে শিক্ষার নতুন কারিকুলাম তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, কারিগরি শিক্ষাকে মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রসার করা হয়েছে। নবম-দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক বা বাণিজ্য এমন কোনো বিভাগ থাকবে না। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা রাখছি না আমরা।
শুক্রবার সকালে (১৭ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শিক্ষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘শিক্ষা: ২০৪১ সালের লক্ষমাত্রা অর্জনের বাস্তবিক কৌশল’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি এসময় বলেন, বর্তমানে বেশিরভাগ শিক্ষিত তরুণের দক্ষতা আর চাকরির নিয়োগকর্তাদের চাহিদার মধ্যে ব্যবধান অনেক। এটা কমিয়ে আনতে হবে। মাধ্যমিক পর্যায়ে একটি ট্রেডে শিক্ষা নিতে হবে। যাতে সে পরবর্তীতে লেখাপড়া না করলেও আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, কর্মমুখী শিক্ষা এবং উদ্যোক্তা তৈরিকে প্রাধান্য দিয়েও বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে। এরই মধ্যে কুড়িগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বিল সংসদে পাস হয়েছে।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি মন্তব্য করেন, আমাদের বর্তমানে যারা শিক্ষকতা করছেন তাদের একটি বড় অংশ ঘটনাচক্রে, অন্য পেশায় না যেতে পেরে এখানে এসেছেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যাতে শিক্ষক হওয়ার লক্ষ্য নিয়েই এ পেশায় আসেন সে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মূল্যায়নের পদ্ধতি বদলে ফেলেছি। শুধু পরীক্ষা-পরীক্ষা-পরীক্ষাই করে যাচ্ছি। আমাদের পুরো পড়ালেখা পরীক্ষার সনদের মধ্যে আটকে গেছিল। পরীক্ষা কেন? একজন শিক্ষার্থীর যোগ্যতা, দক্ষতা দেখার জন্য। সেই দক্ষতা, যোগ্যতা দেখার তো আরও অনেক পদ্ধতি আছে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পরীক্ষার ভারে শিক্ষাজীবন কাটায় শিক্ষার্থীরা। এটা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমরা ধারাবাহিক মূল্যায়ন ব্যবস্থায় জোর দিচ্ছি। সামগ্রিক মূল্যায়নের গুরুত্ব কমে যাবে। এতে করে কেবল পরীক্ষার আগে লেখাপড়া করার পরিবর্তে নিয়মিত শিক্ষায় মনোযোগী হবে শিক্ষার্থীরা।’ এক্ষেত্রে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে বলেও মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য পড়াশোনার মধ্যে আনন্দ নিয়ে আসা। পড়াশোনা যাতে চাপে রূপ না নেয়।’
শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন উপকমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল খালেকের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষা মন্ত্রী ডাক্তার দীপু মনি, বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মুনাজ আহমেদ নুর,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর এ এস এম মাকসুদ কামাল, সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সাবেক সচিব মো. নজরুল ইসলাম খান, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রোকেয়া সুলতানা। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সচিব শামসুন্নাহার চাঁপা।