ফরিদপুরে পদ্মার পানি অব্যাহত ভাবে বৃদ্ধি পাওয়া সাবির্ক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি আরও ৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর ফলে ফরিদপুর সদরের তিনটি ইউনিয়নের পাশাপাশি চরভদ্রাসন উপজেলার চারটি এবং সদরপুর উপজেলার দুটি ইউনিয়নে দুই হাজার ৬৫০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ফরিদপুর সদরের ডিক্রির চর ইউনিয়নের নাজির বিশ্বাসের ডাঙ্গী গ্রামের গৃহবধূ সাদেক ফকিরের স্ত্রী শাহনাজ বেগম (৩০) বলেন, ঘর থেকে বাইর হওয়া যাইতেছে না। রান্না ঘরে চুলায় পানি ঢুকে গেছে, ফলে রান্না করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, সাতটা ছাগল আছে সেগুলি পানি ঝাপাইয়া যাইয়া রাস্তার উপর শুকনা জায়গায় নিয়া রেখেছি।
তাইজদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের হালিম মিয়া (৪৩) বলেন, নিজেরা যেমন তেমন কিন্তু গরুগুলা নিয়ে বিপাকে পড়েছি। তাদের খাওয়াতে না পারলে অস্থির লাগে। মাঠ, ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। গোখাদ্য যোগান দিলে বাঁচতে পারতাম।
এদিকে নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান মোস্তাক বলেন, গতকাল রবিবার উপজেলা থেকে তার ইউনিয়নে গো খাদ্য হিসেবে ২৯ বস্তা খাবার দিয়েছে। প্রতি বস্তায় ৩৭ কেজি করে খাবার আছে। বিতরণের সময় একটি পরিবারে পাঁচ কেজির পরিমান গোখাদ্য দিতে বলা হয়েছে।
ডিক্রির চর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু বলেন, বন্যার কারনে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে যাতায়াতের। বিভিন্ন জায়গায় বাঁশের সাঁকো দিয়া যাতায়ত ব্যবস্থা সচল রাখার চেষ্টা চলছে।
এদিকে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদে পানি বাড়ায় সদরপুরের দিয়ারা নাড়কেল বাড়িয়া ও চরনাসিরপুর ইউনিয়নের ২৭টি গ্রামের ১ হাজার ৪০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি আরও ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদ সীমার ৫১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি বলেন, পানি বৃদ্ধির প্রবণতা কমে আসছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত এ পানি বাড়বে এর পর দুই দিনস্থির থাকার পর পানি কমতে শুরু করবে।