ভোর হতেই ঘুরবে গণপরিবহনের চাকা-থাকবে না আর রাজধানীর সড়কে একটুখানি ফাঁকা । রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছুটে বেড়াবে বাস, ট্রেন ও লঞ্চসহ নানা পরিবহন। হাজার হাজার যাত্রীর পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠবে বিভিন্ন টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও লঞ্চঘাট।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুরোধে সরকার ঘোষিত টানা ৪০ দিনের বিধিনিষেধ শেষে বুধবার (১১ আগস্ট) থেকে ফের চালু হচ্ছে গণপরিবহন। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগের মতো স্বাভাবিক ভাড়ায় চলবে।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন বাস, লঞ্চ ও রেলস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, গণপরিবহন চালুর জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন মালিক ও কর্মচারীরা।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে শ্রমিকরা জানান, ৪০ দিন পর স্বাভাবিকভাবে কাজে ফিরে যেতে পারবে বলে তাদের আনন্দ হচ্ছে। এতদিন বিধিনিষেধে কাজ না থাকায় পরিবার নিয়ে দুর্বিষহ জীবন কেটেছে। কাল থেকে গণপরিবহনের চাকা ঘুরলে মজুরি পাবেন। সংসারের প্রায় থমকে যাওয়া চাকা আবার সচল হবে বলে মন্তব্য করেন শ্রমিকরা।
জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে বিধিনিষেধ উঠে গেলেও দেশে এখনো করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু উল্লেখযোগ্য হারে কমেনি। সবশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে করোনায় ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ১১ হাজারেরও বেশি।
স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা শতভাগ মানুষকে মুখে মাস্ক পরাসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। অন্যথায় সংক্রমণ ও মৃত্যু আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
গণপরিবহন চলাচলে বিআরটিএ’র নির্দেশনা
১. আসন সংখ্যার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। দাঁড়িয়ে নেয়া যাবে না কোনো যাত্রী। সড়কপথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দফতর, সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।
২. পূর্বের ভাড়ায় গণপরিবহন চলবে। ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া আর প্রযোজ্য হবে না। কোনোভাবেই আদায় করা যাবে না অতিরিক্ত ভাড়া।
৩. গণপরিবহনের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার, কন্ডাক্টর, হেলপার-ক্লিনার এবং টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে। তাদের জন্য রাখতে হবে প্রয়োজনীয় হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
৪. যাত্রার শুরু ও শেষে যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নসহ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এছাড়া যাত্রীদের হাতব্যাগ, মালপত্র জীবাণুনাশক ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে যানবাহনের মালিকদের।
৫. গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়াদি মেনে চলতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।