জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে গেলে তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার হওয়ার আশঙ্কা আছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। বুধবার নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এনআইডির দায়িত্ব ইসি অধীনে রাখার জন্য স্মারকলিপি দিতে গেলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এসময় তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের অধীনে এনআইডি থাকলে সুরক্ষা থাকবে।
২০০৭-০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকার কাজ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। বর্তমানে দেশের প্রায় ১২ কোটি নাগরিক তালিকাভুক্ত। ভোটার তালিকার সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র-এনআইডি দেয়ার কাজটিও করে আসছে ইসি।
তবে গত বছরের মে মাসে এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে নিতে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে তোড়জোড়। দ্রুতই এ সংক্রান্ত একটি আইনও উঠতে যাচ্ছে মন্ত্রিসভায়।
এ নিয়ে শুরু থেকে আপত্তি জানিয়ে আসছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তারা।
এসময় কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, নিজেদের মধ্যে আলোচনার পর এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলাপ করা হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, এখানে থাকলে এনআইডি অনেক সিকিউরড থাকবে। ম্যানুপুলেশন কম হতে পারে। ওখানে গেলে পলিটিক্যালি মোটিভেটেট হয় কিনা।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে এনআইডি নেওয়ার আইন হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসেছিলেন। আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ১৫ বা ১৮ বছর ধরে এনআইডির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাদের মাধ্যমেই এনআইডি উঁচু পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এনআইডির সঙ্গে ভোটার তালিকার ডেটাবেজ ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত বলে মনে করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এখন অন্য সংস্থার কাছে চলে গেলে নির্ভরশীলতার বিষয়টি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। সবাই চাচ্ছে, এতদিন এনআইডি যেভাবে ছিল, সেভাবেই যেন থাকে। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমি বলেছি, এটার সঙ্গে সায়েন্টিফিক, টেকনিক্যাল বিষয় আছে। আমি কিছুটা বুঝি, পুরোটা বুঝি না। আমি ইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। আমরা আলাপ-আলোচনা করে যদি কনভিন্সড হই, তাহলে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করব।
স্মারকলিপিতে কর্মকর্তারা বলেছেন, এনআইডির দায়িত্ব ইসি থেকে সরে গেলে ভোটার হওয়ার জন্য আগ্রহ হারাতে পারেন সাধারণ মানুষ।