শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশের মাটিতে মিয়ানমারের মর্টারশেল, সীমান্তে আতঙ্ক

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : আগস্ট ২৮, ২০২২

বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন বান্দরবানের ঘুমধুম তমব্রু সীমান্তে জনবসতিতে বোমা সদৃশ বস্তু আছড়ে পড়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বোমা সদৃশ বস্তু দুটি মর্টার শেল।

রোববার (২৮ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে তুমব্রু উত্তর মসজিদের কাছে ভূপতিত হয়। মর্টারশেলগুলো ওপারে মিয়ানমার থেকে এসে পড়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

এতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয় গ্রামবাসীদের মাঝে।

মোহাম্মদ আনিস নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘বিকেলে বিকট শব্দে গোলাটি উত্তর পাড়ার আয়াজের বাড়ির কাছে এসে পড়ে। পরে আরও একটি গোলা কাছাকাছি রাস্তায় নিক্ষেপ করা হয়। আমরা আতঙ্কে আছি, জানি না কখন কি হয়।’

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ মুঠোফোনে বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ ধরে ওপারে গোলাগুলি হচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রে জেনেছি রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এত দিন পাহাড়ে গোলা ছুড়লেও আজকে উত্তর পাড়ায় মর্টারশেলগুলো পড়েছে, স্থানীয়রা আতঙ্কে আছে।’

ঘটনাস্থলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে সীমান্তে দায়িত্বরত কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন (৩৪ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মেহেদী হোসাইন কবির এর মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

তবে, বিজিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, সীমান্তে কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে সীমান্তে কর্মরত বিজিবির জোয়ানেরা।

রোববার দুপুরে বাজার সদাইয়ের জন্য নিকটবর্তী উখিয়ার কুতুপালং বাজারে আসেন ঘুমধুম উত্তর পাড়ার বাসিন্দা আবুল কালাম (৩৫)। মুঠোফোনে নিজের এলাকায় মর্টার শেল পড়ার খবর পেয়ে পরিবারের জন্য দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘ফোনে ভাই খবর দিলো বোমা পড়ছে। আমি তাকে বলেছি পরিবার নিয়ে এদিকে চলে আসতে, চিন্তা করছি এখানে (কুতুপালং) আত্মীয়ের বাসায় থাকবো।’

এদিকে, রাখাইনে উত্তেজনার কারণে ঘুমধুমের দক্ষিণ কোনাপাড়া সীমান্তের শূন্য রেখায় বাস করা ৬২১টি পরিবারের ৪ হাজার ২০০ রোহিঙ্গারাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

শূন্য রেখার আশ্রয় শিবিরে বাস করা রোহিঙ্গা আবুল হাকিম (৫৩) বলেন, ‘হঠাৎ করেই রাখাইনে তুমুল সংঘর্ষ হচ্ছে, আমরা আতঙ্কে আছি কখন জানি আমাদের হতাহত হতে হয়। মিয়ানমারের বিজিপি চৌকি বসিয়ে আমাদের নজরদারি করছে, নিজ দেশে আদৌ ফেরত যাবো কিনা জানি না।’

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম ইরাবতী তে সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে মায়ানমারের উত্তর মংডুর ৩৮নং সীমান্ত পোস্ট সংলগ্ন এলাকায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও রাখাইনের বিচ্ছিন্ন বাদী সংগঠন আরাকান আর্মির মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে।

এছাড়াও রাখাইনের পালেতুয়া এলাকায় সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩৭ জন মিয়ানমারের সেনাসদস্য নিহত হয় বলে উল্লেখ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ