সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘কথার কথা—১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোট হলো। একটি দলকে তারা ১৪০টি আসন দিয়ে দিল। পেপারে লিখিত না থাকলে এটাই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। কুমিল্লায় এভাবেই হয়েছে। যাচাই-বাছাই করার আর কোনো সুযোগ নেই। আমাদের কমিশনার যেন দেখতেও পান না, শুনতেও পান না। এর মানে তারা অন্ধ ও কালা। তারা কী উদ্দেশ্যে ইভিএম করছে, তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।’
জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ রোববার দুপুরে ‘জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের উপযোগিতা’ বিষয়ক আলোচনা সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সুজন সম্পাদক।
সভায় ইভিএম ব্যবহারের কারিগরি দিক এবং নির্বাচনে এর প্রভাব নিয়ে তৈরি করা মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রযুক্তিবিদ ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো ব্যালটের ১১০ শতাংশ ভোট, নাকি ইভিএমের ৫৩ শতাংশ ভোট, কোনটি ভালো—এমন প্রশ্নের জবাবে সুজন সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব যেন কোনোটাই না হয়, তা নিশ্চিত করা। এটা নিশ্চিত না হলে তাদের ব্যর্থতা। এ দায় তাদের নিতে হবে। নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। তাদের স্বাধীন করা হয়েছে যেন তারা এদেশের মানুষের স্বার্থে কাজ করতে পারে।’
‘আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে তাদের রাখা হয়েছে। তাদের চাকরিচ্যুত করার কোনো বিধান নেই। বিচারকদের মতো তাদের সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। এ দুটির কোনোটিই গ্রহণযোগ্য নয়। যেকোনো একটি হলেই তারা ব্যর্থ বলে বিবেচিত হবে।’
গত নির্বাচনে ইভিএমকে কেন প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়নি—এমন প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘ইভিএম একটা দুর্বল যন্ত্র। গত নির্বাচনে যে অবস্থা ছিল, সে অবস্থায় কিছু আসে যায় না। তখন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলেও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হয়নি। গত নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা এবারের নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক এবং সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করব। এ জন্য ইভিএম বিরাট প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে বলে আমি মনে করি।’
বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, ‘জার্মান জুডিশিয়ারি এজন্য বলছে, ইভিএম মেশিন সঠিক হতে পারে। কিন্তু, ভোটারদের এটা নিয়ে সন্দেহ আছে। এ জন্য আমরা ইভিএম থেকে সরে এসেছি। উন্নত দেশগুলো সরে এসেছে। কিন্তু, আমরা কী উদ্দেশ্যে, কার স্বার্থে, কেন ইভিএমে নির্বাচন করছি, এটা আমাদের মনে বিরাট প্রশ্ন।’