রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সাইবার আইনের প্রত্যাহার হচ্ছে ৫৮১৮ মামলা নদী দূষণমুক্ত করা গেলে পরিবেশ উন্নত হবে ২৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক অফিস আদালত খুলেছে, যানচলাচল স্বাভাবিক ছাগলকাণ্ডে মতিউর ও তার স্ত্রী এবং সন্তানদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত বরুড়ায় মামার বিরুদ্ধে ভাগিনার প্রতারণার গুরুতর অভিযোগ! মোশারফ প্যারিস অলিম্পিকে ডাক পেলেন অলিম্পিক রিংয়ে সাজবে আইফেল টাওয়ার প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা! বরিশাল প্লে-অফে শক্তিশালী হচ্ছেন রওশন, দুর্বল জিএম কাদের! খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মিনিট পরপর চলবে মেট্রোরেল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন ৪৮ নারী প্রার্থী সিরিজ নির্বাচন করতে চায় ইসি

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট শেষ হয় একটি অধ্যায়ের

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : আগস্ট ১৫, ২০২২

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একদিন আগেই অর্থাৎ ১৪ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর বাড়ির নিরাপত্তা কর্মীকেও বদল করা হয়। ১৫ আগষ্ট ভোরে হামলা চালানো হয় বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে। প্রথমেই শেখ কামালকে হত্যা করে ঘাতকরা। গুলির শব্দে নিচে নেমে আসেন বঙ্গবন্ধু। গুলি করে ঝাঁঝড়া করে দেয়া হয় জাতির পিতাকে। তার নিথর দেহ লুটিয়ে পড়ে এক তলার সিঁড়িতে। সেই সাথে শেষ হয় একটি অধ্যায়ের।

৪৭ বছর আগের এই দিনে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসায় হত্যা করা হয় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। একই সাথে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী, ৩ ছেলে, ২ পুত্রবধুসহ পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যকে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সূচনা হয় একটি কালো অধ্যায়ের।

১৫ আগষ্ট ১৯৭৫, দিনটা ছিল শুক্রবার। সেসময় শনি ও রবিবার রাতে মহড়া চালাতো সেনাবাহিনী। তাই শুক্রবার রাতে যখন ট্যাঙ্ক চলাচল শুরু হলো কেউই সন্দেহ করেনি। আর্মার্ড ও আর্টিলারি দুটি বিভাগের অন্তত ১০০ সেনা সদস্য বেরিয়ে আসে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে। তবে মূল পরিকল্পনার কথা জানতো হাতে গোনা কয়েকজন।

আর্মার্ড অর্থাৎ ট্যাঙ্কের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মেজর ফারুক আর আর্টিলারির নেতৃত্বে ছিলেন মেজর রশিদ। তাদের কমান্ডে ফজরের নামাজের সময় অর্থাৎ ভোর পাঁচটা থেকে সোয়া পাঁচটার দিকে বাহিনীটি ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের হয়।

কিছুদূর এগোনোর পর বাহিনীটি তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। একটি গ্রুপ রওনা হয় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির দিকে। আর দুটির একটি রওনা হয় মিন্টো রোডে আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাসার দিকে এবং আরেকটি গ্রুপ যায় ধানমন্ডি ১৩/১-এ শেখ ফজলুল হক মনির বাসায়।

১৫ আগষ্ট ভোরে হামলা চালানো হয় বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে। প্রথমেই শেখ কামালকে হত্যা করে ঘাতকরা। গুলির শব্দে নিচে নেমে আসেন বঙ্গবন্ধু। গুলি করে ঝাঁঝড়া করে দেয়া হয় জাতির পিতাকে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই থেমে থাকেনি ঘাতকেরা। দোতলায় উঠে গুলি করে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুননেসা মুজিবকে। একে একে অন্য দুই ছেলে শেখ জামাল, শিশু পুত্র শেখ রাসেল, দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ আবু নাসের ও এক নিরাপত্তা রক্ষীসহ নয় জনকে হত্যা করা হয়। বিদেশে থাকায় বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

একই সময়ে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির ধানমন্ডির বাসায় হামলা চালায়। সেখানে মারা যান মনি ও তার অন্তঃসত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণি।

আবদুর রব সেরনিয়াবাত সে সময় মিন্টো রোডের মন্ত্রী পাড়ায় থাকতেন। ঘাতকদের একটি গ্রুপ সে বাড়িতেও হামলা চালায়। হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি ও তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী সেরনিয়াবাত ও তার ছেলে-মেয়েসহ ছয় জনকে।

বঙ্গবন্ধুর বাসায় হামলার খবর পেয়ে তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল ধানমন্ডিতে ছুটে যান। পথেই তাকে প্রাণ দিতে হয় ঘাতকের গুলিতে।

১৫ আগস্ট সকাল সাড়ে আটটার দিকে রেডিওতে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর খবর জানানো হয়। একই সঙ্গে সারা দেশে জারি হয় কারফিউ। ষড়যন্ত্রকারীরা কাউকে টেরই পেতে দেয়নি এত বড় একটা হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে রাজধানীতে।

সেদিনই বেলা ১১ টার দিকে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন খন্দকার মোশতাক। গঠন করা হয় মন্ত্রিসভা। এভাবেই জাতির জনককে হত্যা করে রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখল করে খুনিরা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ