ফের নতুন ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে চিনে। এবার যে ভাইরাসের হদিস মিলেছে তার নাম জুনোটিক ল্যাঙ্গিয়া। ইতিমধ্যেই চিনের ৩৫ জন বাসিন্দা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
তাইপেই টাইমসের বরাতে এবিপি জানিয়েছে, তাইওয়ানের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) জানিয়েছে তাইপেই-তে একটি নিউক্লিক অ্যাসিড টেস্টিং মেথড বা পদ্ধতি চালু করা হবে যার মাধ্যমে এই ভাইরাসকে মনিটর করা যায়। এই পদ্ধতিতে ভাইরাস খুঁজে বের করে তার প্রসার বা গতিবিধির উপর নজর রাখা হবে।
খবরে বলা হয়, চিনের শ্যানডং এবং হেনান প্রদেশে এই ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। জীবজন্তুর শরীর থেকে মানুষের শরীরে স্থানান্তরিত হতে পারে এই ভাইরাস। এমনটাই জারিয়েছে তাইপেই টাইমস
তাইওয়ানের সিডিসি ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল চুয়াং জেন-সিয়াং জানিয়েছেন, গবেষণা অনুসারে এখনও এই ভাইরাসের হিউম্যান টু হিউম্যান ট্রান্সমিশন অর্থাৎ একজন মানুষের শরীর থেকে আর একজন মানুষের শরীরে এই ভাইরাস স্থানান্তরিত হতে পারে কিনা তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
পাশাপাশি যাদের শরীরে ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গেছে তাদের এবং অন্যান্যদের এই ভাইরাসের ব্যাপারে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। নতুন ভাইরাসের বিভিন্ন আপডেট সম্পর্কেও গভীর মনোযোগ দিতে বলা হয়েছে। কারণ সিডিসি এখনও এই নতুন ভাইরাস সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারেনি। তবে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে।
ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসের সন্ধান পাওয়ার পর গৃহপালিত জীবজন্তুদের উপর একটি সেরোলজিক্যাল সার্ভে করা হয়েছে। সেই পরীক্ষা নিরীক্ষার ভিত্তিতে দেখা গিয়েছে ২ শতাংশ ছাগলের মধ্যে এই ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। অর্থাৎ তারা পজিটিভ হয়েছে। আর কুকুরদের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ৫ শতাংশ।
এই পরিসংখ্যান পেশ করেছেন সিডিসি’র ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল চুয়াং। এছাড়াও ২৫টি বন্য প্রাণীর প্রজাতির ওপরেও সমীক্ষা চালানো হয়। সমীক্ষার ভিত্তিতে জানা গেছে, শ্রিউ (ইদুরের মতো এক জাতীয় প্রাণি) ল্যাঙ্গিয়া হেনিপাভাইরাসের প্রাকৃতিক সংরক্ষণাগার হতে পারে।
অর্থাৎ এই বন্য প্রাণীর শরীরে বাসা বেঁধে থাকতে পারে উল্লিখিত ভাইরাস। কারণ এর মধ্যেই ২৭ শতাংশ শ্রিউ-এর মধ্যে নতুন এই ভাইরাসটির সন্ধান মিলেছে বলে উল্লেখ করেছেন চুয়াং। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে চীনে নতুন হেনিপাভাইরাসের ফলে মানুষের মধ্যে জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, খাবার, পানীয় জলের মাধ্যমেই পশু থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এই ভাইরাস। জ্বর, ক্লান্তি, সর্দি-কাশি, খিদে না পাওয়া, পেশীতে ব্যথা এবং বমি বমি ভাবের মতো উপসর্গ দেখা দেয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।