চট্টগ্রাম বন্দরের কিছু লাইটার জাহাজ মালিকদের সংগঠনের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে আমদানিকারক ও অন্যান্য জাহাজ মালিকরা। এই সিন্ডিকেট জাহাজের সিরিয়াল দেয়ার নামে অবৈধ বাণিজ্য চালিয়ে আসছে। এতে সময়মত পণ্য পরিবহন ব্যহত হচ্ছে, এমনকি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি পরিবহনও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ‘ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল’ নামের এই সংগঠনের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়েছেন আমদানিকারক, লাইটার জাহাজ মালিক ও সিএন্ডএফ ব্যাবসায়ীরা।
চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে মাদার ভেসেল থেকে আমদানি পণ্য খালাস ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় পরিবহন করা হয় লাইটার জাহাজে। কতিপয় লাইটার জাহাজ মালিকদের সিন্ডিকেট ‘ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল’ গঠন করে লাইটার জাহাজে আমদানি পণ্য পরিবহন নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের সিরিয়াল ছাড়া এবং নির্ধারিত ভাড়ার বাইরে অন্য কোন জাহাজ পণ্য পরিবহন করতে পারে না। এর মাধ্যমে শত কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য করার অভিযোগ উঠেছে এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।
তাদের দৌরাত্মে সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের জ্বালানি পরিবহনও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আমদানি করা কয়লা চট্টগ্রাম থেকে নিয়ে যেতে বাধা দিয়েছে ‘ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল’ সিন্ডিকেট। তাদের সিরিয়াল না নেয়ায় সম্প্রতি ৭টি লাইটার জাহাজকে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা পরিবহনে বাধা দেয় এবং অবৈধভাবে ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করে। (ছবি আছে)। এছাড়া রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা নিতে গেলেও স্পিডবোটে লোকজন পাঠিয়ে হুমকি প্রদান ও বাধা দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের পরিচালক মামুনুর রশীদ ও বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার্স এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজনসহ ভুক্তভোগী ও লাইটার জাহাজ ব্যবহারকারীদের অভিযোগ, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আমদানি পণ্য পরিবহনে নানানভাবে হয়রানি করছে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল। বিদ্যুৎ উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে কয়লা পরিবহন নির্বিঘœ করা ও ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল এর অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।
পণ্য পরিবহনে বাধা দেয়া এবং জাহাজকে জরিমানা করার ক্ষমতা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের নেই বলে স্বীকারও করেছে সংগঠনটির কো-কনভেনর বেলায়েত হোসেন।
ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের নামে কিছু ব্যক্তি লুটপাটে মেতেছে বলেও অভিযোগ করেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। এদের কার্যক্রম খতিয়ে দেখার দাবি জানান তারা।