প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যদিয়ে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিয়েছিলো অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেশকে সম্পূর্ণ পরনির্ভরশীল করে দিয়েছিলো। আওয়ামী লীগ প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
কৃষক লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় এসব বলেন তিনি। ভবিষ্যতে যাতে কোন বিপদের মুখে পড়তে না হয় সেজন্যই আগাম ব্যবস্থা হিসেবে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে আলোচনাসভা এবং সেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙ্গালীর ভাগ্যউন্নয়নের জন্যই জীবন উৎসর্গ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। অথচ কি দুর্ভাগ্য তাকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। খুব পরিকল্পিতভাবে ঘাতকরা দেশে এবং আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে অপপ্রচার চালিয়ে বঙ্গবন্ধুকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করেছিলো। তাকে হত্যার পর দেশের আর কোন উন্নয়ই হয়নি। বরং জোড় করে ক্ষমতাদখলকারী মিলিটারি শাসকরা দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছিলো।
আওয়ামী লীগ দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট থেকে যে দলের জন্ম তাদের কাছে এখন নীতি কথা শুনতে হয়। দেশবাসীকে এসব অপপ্রচার কারীদের দিকে দৃষ্টি দেয়ার আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী।
বৈশ্বিক এই পরিস্থিতিতেও সরকার সব রকমের ব্যবস্থা নিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাশ্রয়ী হওয়ার কথা বলে সরকার আগাম ব্যবস্থা নিচ্ছে।
দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন হলেই বাঙ্গালীর সত্যিকারের স্বাধীনতা আসবে। তাই দলের নেতাকর্মীদের দেশের জনগনের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ কারার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ সালে মানুষ ভোট দিতে পারিনি। তারা ক্ষমতায় আসার পর যেসব নির্বাচন হয়েছে সেখানেও মানুষ ভোট দিতে পারেনি। বিএনপির সন্ত্রাসীরা সিল মারবে, বাক্স ভরবে— এটাই ছিল নীতি। বিএনপির আমলে মানুষের ভোটের অধিকার ছিল না।’
তিনি বলেন, প্রকৃত গণতন্ত্র থাকলে দেশ কত এগিয়ে যায়, বাংলাদেশ আজ তার উদাহরণ। আওয়ামী লীগ এর বাস্তবায়ন করেছে।
শোকসভা অনুষ্ঠানে জনসংখ্যা নিয়ে সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের জনসংখ্যা এখন সাড়ে ১৬ কোটি। এই জনসংখ্যার হিসেবও কারো কারো পছন্দ হয় না। কেন? তাহলে তারা নিজেরাই সন্তান জন্ম দিক, আমরা খাবার দেবো। আমরা চাই, প্রতিটি পরিবার সুখী সমৃদ্ধ হবে। আমরা সে কাজটি করে যাচ্ছি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করে দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছিল। ভবিষ্যতে যেন আর কেউ এমন ছিনিমিনি খেলতে না পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। কারো এক ইঞ্চি জমিও যেন খালি পড়ে না থাকে। বর্ডার গার্ড ও পুলিশ থেকে শুরু করে সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি; যেখানে যতটুকু জমি আছে, যেন খাদ্য উৎপাদন করা হয়।
কৃষকলীগের সভাপতি সমীর চন্দের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতির সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।