গতরাতে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ী অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। স্টোকসের বিদায়ী ম্যাচটি রাঙাতে পারলো না স্বাগতিকরা। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৬২ রানে হারলো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। প্রোটিয়া ব্যাটার রাসি ভ্যান ডার ডুসেন ১৩৪ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল প্রোটিয়ারা।
আগের দিনই স্টোকস ঘোষণা দিয়েছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে দিয়ে ৫০ ওভারের ক্রিকেটকে বিদায় দিচ্ছেন। তাই পুরো ম্যাচ জুড়েই স্পট লাইট ছিলো স্টোকসের উপর। মাঠে লড়াইয়ে নামার আগে স্টোকসকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। এ সময় পুরো স্টেডিয়ামে করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে।
চেষ্টার-লি-স্ট্রিটে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলকে ৩৯ বলে ৩৫ রানের সূচনা এনে দেন প্রোটিয়া দুই ওপেনার জানেমান মালান ও কুইন্টন ডি কক। ১৯ রান করা ডি কককে শিকার করে ইংল্যান্ডকে প্রথম সাফল্য এনে দেন স্যাম কারান।
এরপর দলকে শতরানের জুটি উপহার দেন মালান ও ডুসেন। দ্বিতীয় উইকেটে ১১৪ বলে ১০৯ রানের জুটি গড়েন তারা। হাফ-সেঞ্চুরি তুলে মঈন আলির প্রথম শিকার হয়ে ৫৭ রানে থামেন মালান। ৭৭ বলের ইনিংসে ৫টি চার মারেন তিনি।
মালানের আউটের পর চার নম্বরে নামা আইডেন মার্করামকে নিয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখেন মালান। ইংল্যান্ডের বোলারদের বিপক্ষে সহজেই রান তুলেছেন তারা। এই জুটিতেই ৯০ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন ডুসেন। হাফ-সেঞ্চুরি করেন মার্করামও। ৯ বাউন্ডারিতে ৬১ বলে ব্যক্তিগত ৭৭ রান করা মার্করামকে থামিয়ে এই জুটি ভাঙ্গেন ইংল্যান্ডের লিয়াম লিভিংস্টোন।
তৃতীয় উইকেটে ১২২ বলে ১৫১ রানের মারমুুখী জুটি গড়েন মালান-মার্করাম। আর এই জুটির কল্যাণেই বড় সংগ্রহের পথ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ৩৩৩ রান দাঁড় করায় প্রোটিয়ারা। দক্ষিণ আফ্রিকার এই ইনিংসে কোন ওভার বাউন্ডারি ছিলো না। ওয়ানডে ইতিহাসে ছক্কা ছাড়া ইনিংসে ৩শর বেশি করা তৃতীয় দল হিসেবে নাম লেখালো দক্ষিণ আফ্রিকা। আগের দু’টি করেছে শ্রীলংকা ও ইংল্যান্ড।
১০টি চারে ১১৭ বল খেলে ১৩৪ রান করেন ডুসেন। এছাড়া শেষদিকে ডেভিড মিলার ১৪ বলে ২৪ রান করেন। ইংল্যান্ডের লিভিংস্টোন ২টি উইকেট নেন। ৫ ওভার বল করে ৪৪ রান দিয়ে উইকেট শূন্য ছিলেন স্টোকস।
৩৩৪ রানের টার্গেটে দারুন সূচনা পায় ইংল্যান্ড। দুই ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো ১০২ রানের জুটি গড়েন। তবে দলীয় ১২৫ রানের মধ্যে বিদায় দেন তারা। রয় ৪৩ রানে ও বেয়ারস্টো ৬৩ রানে আউট হন।
চার নম্বরে ব্যাট হাতে নেমেছিলেন স্টোকস। ১১ বলে ৫ রান করে মার্করামের বলে লেগ বিফোর হন তিনি।
স্টোকসের পর শেষ দিকের ব্যাটাররা সুবিধা না করতে পারলে, লড়াই থেকে ছিটকে যায় ইংল্যান্ড। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন জো রুট।
মারুমুখী মেজাজে রানও তুলছিলেন রুট। তবে ইনিংসের ৪৫তম ওভারে সপ্তম ব্যাটার হিসেবে রুটকে থামিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় নিশ্চিত করে ফেলেন এনরিচ নর্টি। ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭৭ বলে ৮৬ রান করেন রুট। ১৯ বল হাতে থাকতে ২৭১ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। দক্ষিণ আফ্রিকার নর্টি ৪ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন ডুসেন।
আগামী ২২ জুলাই ম্যানচেষ্টারে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা।