ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিলো রাশিয়া। সোমবার (১১ জুলাই) সকাল থেকে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করেছে দেশটি। ইউরোপে গ্যাস সরবরাহের মূল পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম এজি দিয়ে গ্যাসের প্রবাহ আর যাচ্ছে না বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি।
তবে নর্ড স্ট্রিম এজির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পাইপলাইনে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের (রুটিন মেইনটেনেন্স) কাজ চলছে। এই কাজ চলবে ১০ দিন। যতদিন এই রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলবে, ততদিন এ পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
জুন মাসেও নর্ড স্ট্রিম এজি দিয়ে গ্যাসের সরবরাহ ৬০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছিল গ্যাজপ্রম। কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল টারবাইনে সমস্যা থাকার কারণে গ্যাসের প্রবাহ কমে গেছে।
তেল-গ্যাস-কয়লাসহ সব ধরনের জ্বালানির জন্য ইউরোপ ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল রাশিয়ার ওপর। ইউরোপের মোট চাহিদার ৩০ শতাংশেরও বেশি গ্যাস আসে রাশিয়া থেকে।
রাশিয়ার গ্যাস উত্তলন ও বিতরণকারী সরকারি কোম্পানি গ্যাজপ্রমের একটি প্রকল্প নর্ড স্ট্রিম এজি পাইপলাইন। এ পাইপলাইনের মাধ্যমে বাল্টিক সাগরের তলদেশ দিয়ে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ করে রাশিয়া; পরে জার্মানির কাছ থেকে সেই গ্যাস ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়। ২০০৫ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে চালু হয় এ প্রকল্প।
গ্যাজপ্রমের পক্ষ থেকে জুন মাসে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার সময় বলা হয়েছিল টারবাইন মেরামতের জন্য কানাডার একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিও করা হয়েছে, কিন্তু সেই কোম্পানি ঠিক সময়ে টারবাইন সরবরাহ করতে পারেনি।
ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর পর রাশিয়ার ওপর একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করতে শুরু করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। রাশিয়ার তেল ও কয়লার ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
গ্যাসের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি না করা হলেও ইইউ নেতারা বলেছিলেন, রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনতে চান তারা।
রাশিয়ার বিকল্প হিসেবে কাতার থেকে গ্যাস আমদানির বিষয়টি বিবেচনায় ছিল ইউরোপীয় নেতাদের, কিন্তু কাতার জানিয়েছে— রাশিয়া প্রতি বছর যে পরিমাণ গ্যাস ইউরোপে সরবরাহ করে, সেই পরিমাণ গ্যাস বিশ্বের আর কোনো দেশের পক্ষে এককভাবে সরবরাহ করা সম্ভব নয়।