রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গভবনে তার পরিবারের সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাসহ ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন।
বঙ্গভবনের একজন মুখপাত্র জানান, সকাল সাড়ে ৮টায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাষ্ট্রপতির ঈদের নামাজ আদায় করেন।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে হঠাৎ করে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ার কারণে রাষ্ট্রপতি রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঐতিহ্যবাহী ঈদের নামাজে এ বছরও অংশ নেননি।
ঈদের নামাজ পরিচালনা করেন বঙ্গভবন জামে মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা সাইফুল কবির। ঈদের নামাজে রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিব এবং কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এছাড়া মোনাজাতে মুসলিম উম্মার শান্তি ও ঔক্য কামনা করা হয়।
পরে রাষ্ট্রপতি দেশবাসীর উদ্দেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আমি দেশবাসীসহ বিশ্বের সকল মুসলিম ভাইবোনদের জানাই আন্তরিকশুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ। মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা। এ উৎসবের সাথে মিশে আছে চরম ত্যাগ ও প্রভুপ্রেমের পরাকাষ্ঠা। কুরবানি আমাদের মাঝে আত্মদান ও আত্মত্যাগের মানসিকতা সঞ্চারিত করে, আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সাথে আনন্দ-বেদনা ভাগাভাগি করে নেয়ার মনোভাব ও সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়।
তিনি আরও বলেন, বিগত দুই বছরের করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এর সাথে এখন যুক্ত হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট। এসব যুদ্ধ-সংঘাতের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি চাপের মুখে পড়েছে, বেড়েছে মূল্যস্ফীতির চাপ। সরকার এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বিভিন্ন প্যাকেজ প্রণোদনা প্রদানসহ বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। কৃষি ও শিল্পসহ উৎপাদনশীল প্রতিটি খাতের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতেও সরকার সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা মোকাবিলায় বন্যাদুর্গত, অস্বচ্ছল ও নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবেও বিভিন্ন সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়েও উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
কেউ যাতে ঈদের আনন্দ হতে বঞ্চিত না হয় সেলক্ষ্যে আমি দেশের বিত্তবান ও স্বচ্ছল ব্যক্তিবর্গকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। ত্যাগের শিক্ষা আমাদের ব্যক্তি জীবনে প্রতিফলিত হলেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে শান্তি ও সৌহার্দ্য।
এবারের ঈদের আগেই দেশবাসীর কাছে মহাখুশির উপলক্ষ্য হয়ে এসেছে গৌরবের নিদর্শন পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন। এর মাধ্যমে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২১ জেলার তিন কোটি মানুষের বহুমুখী যোগাযোগের অপার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আগামী বছর সেতুতে রেল সংযোগ স্থাপিত হলে দেশের সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নতুন মাত্রা যোগ হবে। পদ্মা সেতুর ফলে দেশের অর্থনীতিতে যে ইতিবাচক অগ্রগতির সুযোগ সৃষ্টি হলো তা সমগ্র দেশবাসীর জন্যই বিশেষ আনন্দের বিষয়।
দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব এবং বিদেশি কূটনীতিক বা অতিথিদের উপস্থিতিতে খাবার পরিবেশনের সাথে কোনো আনুষ্ঠানিক শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর্ব থাকছে না বলে মুখপাত্র জানান।