আজ শুক্রবার পবিত্র হজ। সারাদিন লাখো মুসল্লির মিলনমেলায় পরিণত হবে আরাফাত ময়দান। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত এই ময়দানে অবস্থান করাই হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা।
সেখানে লাখ লাখ হাজির কণ্ঠে ধ্বনিত হবে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা শারিকা লাক’ (অর্থাৎ আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার)।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সৌদি আরবে সমবেত হওয়া মুসল্লিরা গতকাল মিনায় নিজ নিজ তাঁবুতে নামাজ আদায়সহ অন্যান্য ইবাদত করেছেন। সেখানে ফজরের নামাজ পড়ে আজ সূর্যোদয়ের আগেই হাজিরা ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে হাজির হন। সেখানে উপস্থিত হওয়া হজের অন্যতম ফরজ।
আরাফাত ময়দানের তিন দিক পাহাড়বেষ্টিত। মাঝে দুই মাইল দৈর্ঘ্য ও দুই মাইল প্রস্থের এই সমতল ভূমি। জাবাল মানে পাহাড়। জাবালে রহমত হলো রহমতের পাহাড়।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) জাবালে রহমত পাহাড়ের কাছে দাঁড়িয়ে বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। একে কেউ কেউ দোয়ার পাহাড়ও বলে থাকে। বলা হয়ে থাকে, এই পাহাড়ে হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়ার (আ.) দেখা হয়েছিল।
আরাফাতের ময়দানে খুতবার পর জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন মুসল্লিরা। এ ছাড়া আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকবেন হাজিরা। সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতে অবস্থানের পর হাজিরা মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবেন।
রাতে সেখানে অবস্থান করবেন খোলা মাঠে। শয়তানের প্রতিকৃতিতে পাথর নিক্ষেপের জন্য প্রয়োজনীয় পাথর সংগ্রহ করবেন সেখান থেকে। মুজদালিফায় ফজরের নামাজ আদায় করে হাজিরা মিনায় ফিরবেন।
মিনায় বড় শয়তানকে সাতটি পাথর মারার পর পশু কোরবানি দিয়ে মাথার চুল ছেঁটে (ন্যাড়া করে) গোসল করবেন। সেলাইবিহীন দুই টুকরা কাপড় বদল করবেন। এরপর স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে পবিত্র কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন।
কাবার সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় ‘সাঈ’ (সাতবার দৌড়ানো) করবেন। সেখান থেকে তারা আবার মিনায় যাবেন। মিনায় যত দিন থাকবেন, তত দিন তিনটি (বড়, মধ্যম, ছোট) শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন। আবার মক্কায় বিদায়ী তাওয়াফ করার পর নিজ নিজ দেশে ফিরবেন।