আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাংক আমাদের দুর্নীতি আর চুরির অপবাদ দিয়ে অর্থায়ন থেকে সরে গিয়েছিল।, পুরো বঙ্গবন্ধু পরিবারকে অপমান করেছিল। আমাদের ভাবমূর্তিকে আঘাত করেছে। তাই এই সেতু শুধু আমাদের সক্ষমতারই নয়, অপমানের প্রতিশোধ।’
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আজ বুধবার (৮ জুন) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে না, ব্যয় সংকোচন করে হেলিকপ্টার কেনা হবে-এ ধরনের গুজবও আছে। মির্জা ফখরুল বলেছেন, মাওয়া আর জাজিরায় দুটি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন খালেদা জিয়া, যা রূপকথার গল্প ও মিথ্যাচার। এদের বুকে বিষজ্বালা, যা নিয়ে তারা অপপ্রচার করছে। ২৫ তারিখ তাদের সমুচিত জবাব দেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর উপকারভোগী হবে সারা বাংলাদেশ। সবার সমন্বিত প্রয়াসে আমাদের স্বপ্নের প্রতিফলন ঘটবে, দক্ষিণের মানুষের জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার নিয়ে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। যে সেতুর জন্য এত অপমান, তার নাম থাকবে নদীর নামের সঙ্গেই, এটাই বঙ্গবন্ধু কন্যার সিদ্ধান্ত।’
সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামের ঘটনা স্যাবোটাজ কি না, জানি না। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে ষড়যন্ত্র আছে। এমনকি উদ্বোধনের দিনে কিছু ঘটানোর জন্যও অনেকেই মরিয়া হয়ে আছে। সুতরাং সবাইকে স্যাবোটেজের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
ওবায়দুল কাদের জানান, ২৫ তারিখে কোনো গাড়ি পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যাবে না। ২৬ তারিখ সকাল থেকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে যাতায়াত শুরু হবে। ২৫ তারিখ কিছু সময়ের জন্য হয়তো পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে দেয়া হবে। সবকিছু জানিয়ে দেয়া হবে।’
সভায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে অংশ নেন পদ্মার দুই পাড়ের জেলাগুলোর সংসদ সদস্য, জেলা ও উপজেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা। আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর সংসদ সদস্য, জেলা ও উপজেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা।
সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠান এবং আলোচনা সভায় খুলনা, বরিশাল এবং ঢাকার আশপাশের জেলার প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ অংশ নিবে। সকাল ১০টায় মাওয়া প্রান্তে পদ্মাসেতু উদ্বোধন করবেন। পরে সকাল ১১টায় সেতুর অপর প্রান্তে কাঠালবাড়ি ঘাটে জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া সকাল ১০টার আগে সবাইকে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হতে হবে। পদ্মা এলাকায় সকাল ১০টার পর সব ধরণের নৌ চলাচল বন্ধ থাকবে। সেতু উদ্বোধনের দিন থেকে ৩০শে জুন পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান হবে। অনুষ্ঠানগুলো একসঙ্গে ৮টি বিভাগে, ৬৪ জেলায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সেতু বিভাগের সচিব মঞ্জুর হোসেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাহজাহান খান, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ. ফ. ম বাহাউদ্দীন নাসিম, সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামিম, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মী এবং সংসদ সদস্যরা।