গত এক সপ্তাহে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২৫ ডলারের বেশি বেড়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় এক মাস দরপতন হওয়ার পর বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা গেছে।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়লেও দেশের বাজারে স্বর্ণের দামে এখনও পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী সোমবার (২৫ অক্টোবর) দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ার বিষয়টি আমরা দেখেছি। দেশের বাজারে এখনও স্বর্ণের দাম সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আমরা আগামী সোমবার পর্যন্ত দেখবো। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকলে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হবে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোশ শুরু হওয়ার পর থেকেই বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যায়। মাঝে কিছুটা দাম কমলেও এপ্রিল ও মে মাসজুড়ে স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখী ধারায় থাকে।
বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ায় মে মাসে দেশের বাজারে দুই দফায় ভরিতে স্বর্ণের দাম চার হাজার ৩৭৪ টাকা বাড়ায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি। জুনের শুরুতে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় পতন হয়। ফলে বাংলাদেশেও স্বর্ণের দাম কমানো হয়।
কিন্তু আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বেশ অস্থিরতা দেখা দেয়। কয়েক দফা উত্থান-পতনের মাধ্যমে একপর্যায়ে আউন্সপ্রতি স্বর্ণের দাম একশ ডলারের মতো বেড়ে যায়। ফলে বাংলাদেশেও স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়।
সেপ্টেম্বরে এসে আবার দরপতনের মধ্যে পড়ে স্বর্ণ। ফলে বাংলাদেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম কমানো হয়। সর্বশেষ গত ১ অক্টোবর বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) ভরিতে এক হাজার ৫১৬ টাকা কমিয়ে স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করে। এতে সবচেয়ে ভাল মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণ ৭১ হাজার ৯৬৭ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ ৬৮ হাজার ৮১৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ ৬০ হাজার ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ৪৯ হাজার ৭৪৭ টাকা।
বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম কমানোর পর গেলো সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় উত্থান হয়। গেলো সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস সোমবার বিশ্ববাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার আগে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল এক হাজার ৭৬৭ দশমিক ৩৪ ডলার। আর সপ্তাহ শেষে তা এক হাজার ৭৯২ দশমিক ৭৯ ডলারে উঠে এসেছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বেড়েছে ২৫ দশমিক ৪৫ ডলার বা ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
স্বর্ণের পাশাপাশি গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে রুপার দামেও বড় উত্থান হয়েছে। গত এক সপ্তাহে রুপার দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স রুপার দাম বেড়েছে ২৪ দশমিক ৩০ ডলারে।
দাম কমেছে আরেক দামি ধাতু প্ল্যাটিনামের। গত সপ্তাহে এ ধাতুটির দাম কমেছে ১ দশমিক ৩১ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স প্ল্যাটিনামের দাম দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪০ দশমিক ৬৮ ডলারে।