বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, নিহতদের ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে। এই দুর্ঘটনার কারণ তদন্তে দু’টি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। ফায়ার ব্রিগেড যেহেতু এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তাদের তদন্ত কমিটিও কাজ করছে। তদন্ত কমিটিকে সিআইডির পক্ষ থেকে বিশেষ সহায়তা প্রদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তশেষে রিপোর্টের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (৭ জুন) সকালে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
আইজিপি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের পর দুর্ঘটনাস্থলে যে রেসিডিউ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে সেগুলো সংগ্রহ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এগুলোও কেমিক্যাল টেস্ট করে দেখতে হতে পারে।
তিনি বলেন, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ৪১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত ফায়ারম্যানও রয়েছেন। তিনি অত্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমার ৩৪ বছরের ক্যারিয়ারে একসাথে এত ফায়ারম্যান কখনো নিহত হতে দেখিনি। আমাদের ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজন মারাত্মক আহত হয়েছেন। আমাদের একজন পুলিশ সদস্য অঙ্গ হারিয়েছেন।
দেশের জন্য আত্মত্যাগকারী সাহসী ফায়ারম্যান, নিহত শ্রমিকসহ প্রত্যেকের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান আইজিপি। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে আইজিপি বলেন, আপনারা চিকিৎসা শেষে ভালো ও সুস্থ হয়ে উঠবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
আইজিপি বলেন, বর্তমান পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিভিন্ন হাসপাতালে ২৩০ জন চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। তিনি উদ্ধার কাজে নিয়োজিত সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, স্বেচ্ছাসেবক এবং আহতদের চিকিৎসায় নিয়োজিত ডাক্তার, নার্সসহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
পরে আইজিপি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান এবং আহতদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন। আহতদের চিকিৎসায় যেন কোন ধরনের বিঘ্ন না ঘটে সে বিবেচনায় হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকেন আইজিপি।
এরপর তিনি বিষ্ফোরণস্থলে উদ্ধারকাজে নিয়োজিত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর মো. মোতাহার হোসেন এবং কনস্টেবল মো. বেলাল হোসেনকে দেখতে নগরীর দামপাড়ায় পুলিশ হাসপাতালে যান এবং তাদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন।
এসময় সঙ্গে ছিলেন- চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীরসহ চট্টগ্রাম পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।