জাতীয় সংসদের টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের টানা চারবারের সংসদ সদস্য, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. একাব্বর হোসেন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। একাব্বর হোসেনের স্ত্রী ঝর্ণা হোসেন এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
ঝর্ণা হোসেন জানান, তার স্বামী (একাব্বর হোসেন) দীর্ঘদিন ধরে কিডনিসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন। গত ১৬ অক্টোবর তিনি ব্রেন স্ট্রোক করেন। পরে তাকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
একাব্বর হোসেন ১৯৫৬ সালে মির্জাপুর উপজেলার পোষ্টকামুরী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ওয়াজ উদ্দিন এবং মা রেজিয়া বেগম। তিনি ১৯৭৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস (সম্মান) ও ১৯৭৮ সালে এমএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন।
ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন। ১৯৭৩ সালে সরকারি তিতুমীর কলেজে পড়াকালে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৭৮ সালে একই হল শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
মির্জাপুর উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির তিনবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালে মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ ছাড়া মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে টাঙ্গাইল-৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এদিকে টাঙ্গাইল-৭ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. একাব্বর হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পৃথক পৃথক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী একাব্বর হোসেনের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আগামীকাল বুধবার (১৭ নভেম্বর) বাদ জোহর মির্জাপুর এসকে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করার কথা রয়েছে।