জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলো তার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
এ উপলক্ষে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শেখ কামালের সমাধিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরে ওবায়দুল কাদের দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ কামালের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ ও বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন ও মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়াসহ আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে তারা ১ মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করেন। এরপর মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।পরে নেতারা শেখ কামালের সমাধিতে ফুল ছিটিয়ে দেন।
এরপর একে-একে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগসহ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এর আগে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো সকাল ৮টায় ধানমন্ডির আবাহনী ক্লাব প্রাঙ্গণে শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।
শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ১৯৪৯ সালের এই দিনে তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহাকুমার (বর্তমানে জেলা) টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী শহীদ শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে বি এ (অনার্স) পাস করেন। বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি অঙ্গনের শিক্ষার অন্যতম উৎসমুখ ‘ছায়ানট’-এর সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন।
তিনি শুধু উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতাই ছিলেন না, ছিলেন ঢাকা থিয়েটারেরও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। শৈশব থেকে খেলাধূলায়ও প্রবল উৎসাহ ছিল তার।
শেখ কামাল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন্ড লাভ ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এবং শাহাদাত বরণের সময় বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠন জাতীয় ছাত্র লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার নির্মম ঘটনায় মাত্র ২৬ বছর বয়সে শাহাদাতবরণ করেন তিনি।